নিজস্ব প্রতিবেদক,
কুষ্টিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ৮ মাস পার হলেও ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি পুলিশ। অন্যদিকে পুনঃনির্মাণের ৬ মাস পার হলেও হয়নি উদ্বোধন।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে এ ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তখন নির্মাণকাজ সম্পন্নপ্রায়। ভাঙচুরের পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কাজ শেষ হয়। সেই থেকে এখনো উদ্বোধনের অপেক্ষায় কুষ্টিয়া শহরের ৫ রাস্তা মোড়ে জাতির জনকের তিন ভাস্কর্য। কবে নাগাদ উদ্বোধন হবে তারও কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে শহরের ব্যস্ততম ৫ রাস্তা মোড়ে শাপলার ভাস্কর্য ভেঙে সেখানে জাতীয় চার নেতার মুর্যালের ওপরে বঙ্গবন্ধুর এ তিনটি ভাস্কর্য স্থাপন করেছে কুষ্টিয়া পৌরসভা। এর মধ্যে পশ্চিমদিকেরটি ঐতিহাসিক ৭ মার্চ এর আদলে তৈরি, পূর্বদিকেরটি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যবর্তন এবং উত্তরদিকেরটি ৬ দফা আন্দোলনের আদলে। বঙ্গবন্ধুর একেকটি ভাস্কর্য মহান মুক্তিযুদ্ধের এক অনন্য স্থাপনা।
ভাস্কর জামাল মাহাবুব জানান, ‘নির্মাণকালে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাস্কর্যটির হাত ও তর্জনী এবং মুখের অংশ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। নতুন করে সেটি মেরামত করা কঠিন কাজ ছিলো কিন্তু সেটি চার দিনে মেরামত করতে পেরেছিলাম।’
কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আতাউর রহমান আতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ শেষ হলেও আনুষ্ঠিকভাবে উদ্বোধন না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন।
কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, ‘আমরা গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবসে এ ভাস্কর্য উদ্বোধনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছিলাম। তবে এখনো উদ্বোধনের কোন আনুষ্ঠানিক তারিখ পাইনি।’
মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা নিশিকান্ত সরকার জানান, গত ৫ ডিসেম্বর রাতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটির হাত এবং মুখের অংশ ভাঙচুর করে। এ মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে দুজন মাদ্রাসাছাত্র ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। তার পর থেকে তারা জেলা কারাগারে রয়েছে।
মামলার চার্জশিট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অধিকতর তদন্তের জন্য এখনো চার্জশিট দেওয়া হয়নি। তবে দ্রুত তদন্ত শেষে চার্জশিট দেওয়া হবে।’
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ রাস্তা মোড়ের বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কোন নিদের্শনা আমরা পাইনি। এটা পৌরসভা নির্মাণ করেছে। পৌর কর্তৃপক্ষ এটা উদ্বোধনের ব্যপারে জানাতে পারেন।’
কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দিন জানান, ‘করোনার কারণে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি ভার্চুয়ালভাবে উদ্বোধনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দপ্তর থেকে নির্দেশনা আসলে তারপর উদ্বোধন করা হবে।’
বিএসডি/আইপি