কৃষি ডেস্ক,
আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে প্রতিবছর এক লাখ মেট্রিক টন আম রফতানির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা, রোডম্যাপ প্রণয়নের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদেরকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
সোমবার (২৩ আগস্ট) ’আম রফতানি বৃদ্ধির জন্য আমের উন্নত ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে হর্টেক্স ফাউন্ডেশন আয়োজন করে এ কর্মশালার।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে বছরে ২৫ লাখ টন আম উৎপাদিত হয়। অথচ রফতানি হয় মাত্র কয়েকশ টন আম। বছরে এক লাখ টন আম রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। সে লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন, রোডম্যাপ প্রণয়ন ও আমের নতুন বাজার খুঁজে বের করতে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আম রফতানি বৃদ্ধির জন্য ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। রফতানির বাধাগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে নিরাপদ আমের নিশ্চয়তা দিতে তিনটি ভ্যাকুয়াম হিট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে।
তিনি জানান, উৎপাদন থেকে শিপমেন্ট পর্যন্ত আম নিরাপদ রাখতে উত্তম কৃষি চর্চা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট দেওয়ার কাজ চলছে। এর ফলে চলতি বছর গত বছরের তুলনায় আম রফতানি পাঁচ গুণ বেড়েছে। আগামীতে রফতানির পরিমাণ অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ এবং এনএটিপি-২ প্রকল্পের পরিচালক মো. মতিয়ার রহমান। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংস্থাপ্রধান, আমচাষি, ব্যবসায়ী, শাকসবজি ও ফল রফতানিকারক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, দেশে প্রতিবছর আমের উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় রফতানির পরিমাণ অনেক কম। ডিইএর হিসাবে ২০১৯-২০ সালে দেশে প্রায় ২৫ লাখ টন আম উৎপাদিত হয়েছে। বিপরীতে আম রফতানি হয়েছে ২৮৩ মেট্রিক টন। তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের ফলে চলতি বছর ২০২০-২১ সালে ১৬২৩ মেট্রিক টন আম রফতানি হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় পাঁচ গুণেরও বেশি।
কর্মশালায় আরও জানান হয়, দেশে উৎপাদিত আমের বিরাট অংশ গড়ে শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে নষ্ট হয়। খিরসাপাত আমের ক্ষেত্রে ৩৭ ভাগ ও ফজলি আমের ২৯ ভাগ নষ্ট বা অপচয় হয়। এতে ক্ষতির পরিমাণ বছরে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
কর্মশালায় আম রফতানির বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য নতুন বাজার অনুসন্ধান, রফতানি চাহিদা অনুযায়ী উন্নতজাত নির্বাচন, ফাইটোস্যানিটারি পদ্ধতি বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও আমদানিকারক দেশের উত্তম কৃষি চর্চা মেনে আম উৎপাদন, সার্টিফিকেশন, উন্নত প্যাকিং, উন্নত সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থা, রফতানি কার্যক্রমে দক্ষতা, সচেতনতা ও প্রশিক্ষণসহ বিমানবন্দরে সুষ্ঠু কার্গো ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বিএসডি/ এএ