নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুরুষের বহুবিবাহের বিধান নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে স্ত্রীদের সমান অধিকার নিশ্চিত না করে পুরুষের বহুবিবাহের বর্তমান প্রক্রিয়া সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কেন নয়, তা জানতে চাওয়া হয়েছে ।
পাশাপাশি এ বিষয়ে একটি পৃথক নীতিমালা কেন করা হবে না, তাও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে ।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এই রুল জারি করেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয় সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সচিব এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান। এর আগে তিনি গত ১৩ ডিসেম্বর বহুবিবাহের অনুমতি সংক্রান্ত মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।
রিটে বহুবিবাহের অনুমতি সংক্রান্ত মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারা অসাংবিধানিক ঘোষণার আবেদন করা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, ইসলাম ধর্মে এক স্ত্রী থাকাবস্থায় পুরুষের একাধিক বিয়ে করার বিধান রয়েছে। একসাথে চারজন পর্যন্ত স্ত্রী রাখার অনুমতি থাকলেও পবিত্র কোরআনে সকল স্ত্রীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ১৯৬১ মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারায় বহুবিবাহের যে বিধান করা হয়েছিল তাতে সকল স্ত্রীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টি উপেক্ষিত। যদিও স্বামীর বহুবিবাহের ফলে বর্তমান স্ত্রীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, তথাপি সালিশি কাউন্সিলকে অনুমতি দেয়ার সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যা, বর্তমানে স্ত্রীর সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে।
আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, মুসলিম পারিবারিক আইনের বিষয়ে পারিবারিক আদালত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখানে বহুবিবাহের মত গুরুত্ববহ ইস্যু কেবল সালিশি কাউন্সিলের হাতে দেয়া হয়েছে, যা নারীর মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
তিনি আরও বলেন,উন্নত মুসলিম দেশগুলোতে বহুবিবাহের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, আর্থিক সক্ষমতার সনদ ইত্যাদি দাখিল করে ও বর্তমান স্ত্রীর বক্তব্য শুনানি করে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। অথচ আমাদের দেশে সালিশী কাউন্সিলের সাক্ষ্য-প্রমাণ নেয়ার আইনগত সুযোগ নেই। বহুবিবাহের বর্তমান যে বিধান রয়েছে তা সংশোধন করে আরও কঠোর বিধান করা উচিত। এজন্য এই রিট দায়ের করা হয়েছে।
বিএসডি/ এলএল