নিজস্ব প্রতিবেদক:
যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ৪১ কেজি ৪৯০ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করেছেন ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা। এর মধ্যে রয়েছে ৩২১টি স্বর্ণের বিস্কুট, ৪টি স্বর্ণের বার এবং একটি স্বর্ণমুদ্রা।
গত বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাতে ভারতের ১৫৮ বিএসএফের টহল দলের সদস্যরা ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার জেলার বনগাঁ থানার ঘোনার মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ স্বর্ণ জব্দ করেন, যার বাজার মূল্য ভারতীয় টাকায় ২১ কোটি ২২ লাখ। পাচারকারীরা বিএসএফের উপস্থিতি টের পেয়ে নৌকা রেখে ইছামতী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়।
ওপারের বিএসএফ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিএসএফের ঘোনারমাঠ আউটপোস্টের ১৫৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের কাছে ওই এলাকা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে সোনা পাচারের খবর আসে। ঘোনারমাঠ গ্রামের কাছে ইছামতী নদীর ধারে আন্তর্জাতিক সীমান্তে তল্লাশি শুরু করেন জওয়ানরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ আটজনের সন্দেহভাজন একটি দলকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ইছামতী নদীতে একটি কাঠের নৌকায় ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে দেখেন তারা। তাদের ধরার চেষ্টা করা হলে তারা সমস্ত জিনিসপত্র ফেলে রেখে নদীতে ঝাঁপ দেয়। পরে নৌকায় তল্লাশি চালিয়ে পাঁচটি ব্যাগ খুঁজে পায় বিএসএফ। তার মধ্যে ছিল ৩২১টি স্বর্ণের বিস্কিট, চারটি স্বর্ণের বার ও একটি স্বর্ণমুদ্রা। আটক করা হয় কাঠের নৌকাটি। এ ছাড়া উদ্ধার হয়েছে চারটি মোবাইল ফোন ও প্যাকিং সামগ্রী।
বিএসএফ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে স্বর্ণ পাচার আটকের ক্ষেত্রে এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য। পাচারকারীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বিএসএফ।
বাংলাদেশ থেকে এ দেশে স্বর্ণ পাচার নতুন নয়। বিএসএফ ও শুল্ক দপ্তরের কর্মকর্তারা নজরদারি চালানোর সময়ে বহুবার স্বর্ণের বিস্কুট আটক করেছেন। গ্রেপ্তার হয়েছে পাচারকারীরা। যদিও অভিযোগ, যারা গ্রেপ্তার হয় তারা মূলত ‘ক্যারিয়ার’। অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বিস্কুট পৌঁছে দেয়মাত্র। কিন্তু অধরাই থেকে যায় পাচারের মূল মালিকরা। সীমান্তে কড়া নজরদারি থাকা সত্বেও পাচার চলছেই। কারণ, মূলত ‘সোর্স ইনর্ফমেশন’ বা পাকা খবর ছাড়া স্বর্ণের বিস্কুট ধরা সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছে পুলিশের একটি সূত্র। তাদের দাবি, স্বর্ণের বিস্কুট আকারে ছোট। সহজেই লুকিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। তা ছাড়া সীমান্তে সর্বত্র কাঁটাতার না থাকায় ধরা যাচ্ছে না পাচারকারীদের।
এ ব্যাপারে খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তানভীর রহমান (পিএসসি, ইঞ্জিনিয়ার্স) জানান, আপনারা যেমন শুনেছেন আমরাও সেভাবে শুনেছি। স্বর্ণ আটকের খবরটি যেহেতু ভারতীয় বিএসএফের কাছে ছিল সে কারণে তারা আটক করেছে। তবে অফিসিয়ালি ভারতীয় বিএসএফ বিষয়টি আমাদের জানায়নি। অফিসিয়ালি আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।