আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পারস্পরিক তিক্ততা দূর করতে বৈঠকে বসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করেছে, বৈঠকে তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘পিছু হটতে’ জোর দেবেন জিনপিং।
জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হওয়ার পর এই প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসছেন দুই দেশের দুই শীর্ষ নেতা। চীনের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে এই বৈঠক।
চীনের ইংরেজি দৈনিক চায়না ডেইলি তাদের সম্পাদকীয়তে জানিয়েছে, বৈঠকের আলোচন্যসূচিতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, প্রযুক্তি, জিনজিয়াং ও তাইওয়ান- এই কয়েকটি ইস্যু রয়েছে। তবে তাইওয়ান ইস্যুতে ‘বিশেষ গুরুত্ব’ দিতে চান জিনপিং।
নিজেদের সম্পাদকীয়তে চায়না ডেইলি এ সম্পর্কে বলেছে, ‘চীন যে কোনো মূল্যে, প্রয়োজনে জোর করে হলেও তাইওয়ানকে নিজেদের দখলে আনবে। বৈঠকে এই কথাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন জিনপিং।
চীনের রাষ্টায়ত্ব অপর একটি ইংরেজি পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস তাদের সম্পাদকীয়তে লিখেছে, ‘তাইওয়ান প্রশ্নটিই চীনের চুড়ান্ত রেড লাইন।’
সম্পাকদকীয়তে গ্লোবাল টাইমস আরও লিখেছে, ‘চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ঝুঁকি ও কূটনৈতিক সংঘাত এড়ানোর পন্থা একটিই- দ্বিতীয় পক্ষকে (যুক্তরাষ্ট্র) তাইওয়ান প্রশ্নে পিছু হটতে হবে এবং এক্ষেত্রে সংযমের পরিচয় দিতে হবে।’
এদিকে, শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে ফোন করেছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ফোনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, ‘তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ভুল সংকেত(সহযোগিতা) দেওয়া থেকে ওয়াশিংটনের অবশ্যই বিরত থাকা উচিত।’
তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের ধারণা, তাইওয়ান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের ‘পিছু হটার’ বিষয়টি কেবল আলোচনার মধ্যেই রাখবেন জিনপিং। এই নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনোভাবেই যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছে নেই দেশটির।
সিঙ্গাপুরের এস রাজারাত্মাম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক লি মিংজিয়াং এ সম্পর্কে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘চীনের আধুনিয়কায়ন এখন সম্পূর্ণ হয়নি, দেশের সামাজিক ব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে এখনও বহু চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং এ বিষয়ে চীনের নেতারা সম্পূর্ণ সচেতন।’
‘তারা এটিও ভালোভাবেই জানেন- এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর মানে বছরের পর বছরের চেষ্টায় চীন যতখানি এগিয়েছে- তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং দেশটি আবার কয়েক যুগ পিছিয়ে যাবে।’