নিজস্ব প্রতিবেদক:
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে অতিরিক্ত চাহিদা বাড়ায় ২৩ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের এ টাকা সরবরাহ করা হবে। ২০ এপ্রিল থেকে নতুন নোট সংগ্রহ করতে পারবেন গ্রাহকরা। ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত (সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত) নতুন নোট বিনিময় করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত দুই বছর বৈশ্বিক করোনাভাইরাস মহামারির কারণে মানুষের জীবনযাত্রায় নেমে এসেছিল এক ধরনের স্থবিরতা। সে সময়ের রোজার ঈদেও ছিল নিস্তব্ধতা। কেনাকাটা হয়নি বললেই চলে। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সে কারণে আগে থেকেই দেখা যাচ্ছে ঈদানন্দ। আমদানি-রপ্তানি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বাজার, শপিংমল সবই চাঙা হয়ে উঠছে। ফলে নগদ টাকারও চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া ঈদ এলে নতুন টাকার কদর বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে টাকার চাহিদা বাড়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সব ধরণের কর্মকাণ্ড বেড়েছে। আমদানি-রপ্তানি চাঙ্গা, প্রবাসী আয়ও গত মাসের তুলনায় অনেক বেশি এসেছে। ফলে টাকার চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া প্রতি ঈদে নতুন টাকার বিশেষ চাহিদা থাকে। সব দিক বিবেচনায় এবারের ঈদে ২৩ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট প্রস্তুত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সবকিছু নির্ভর করছে চাহিদার ওপর। চাহিদা যদি আরও বেড়ে যায়, সে প্রস্তুতিও বাংলাদেশ ব্যাংকের রয়েছে।
জানা গেছে, ঈদের আগে বিশেষ বুথে সাধারণ মানুষের কাছে নতুন নোট বিনিময় করত বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর সেই প্রথা বন্ধ রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার করোনা প্রকোপ কমে যায়ওয়া আবারও নোট বিনিময় করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন অফিসের কাউন্টারের মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে নতুন নোট বিনিময় করা হবে। এছাড়া ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৩২টি শাখা থেকেও উল্লিখিত সময়ে ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকা মূল্যমান পর্যন্ত নতুন নোট বিশেষ ব্যবস্থায় একটি প্যাকেট করে বিনিময় করা হবে।
একজন ব্যক্তি একাধিকবার নতুন নোট গ্রহণ করতে পারবেন না। তবে নোট উত্তোলনকালে কেউ ইচ্ছা করলে কাউন্টার থেকে পরিমাণ নির্বিশেষে যে কোনো মূল্যমানের ধাতব মুদ্রা গ্রহণ করতে পারবেন।
যেসব ব্যাংক ও শাখায় নতুন টাকা পাওয়া যাবে তার মধ্যে রয়েছে এনসিসি ব্যাংকের যাত্রাবাড়ী শাখা, জনতা ব্যাংকের আব্দুল গণি রোড করপোরেট শাখা, অগ্রণী ব্যাংকের জাতীয় প্রেস ক্লাব করপোরেট শাখা, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের মিরপুর শাখা, সাউথইস্ট ব্যাংকের কাওরান বাজার শাখা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা সিটি (পান্থপথ) শাখা, উত্তরা ব্যাংকের চকবাজার শাখা, সোনালী ব্যাংকের রমনা করপোরেট শাখা, ঢাকা ব্যাংকের উত্তরা শাখা, আইএফআইসি ব্যাংকের গুলশান শাখা, ন্যাশনাল ব্যাংকের মহাখালী শাখা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখা, জনতা ব্যাংকের রাজারবাগ শাখা, পূবালী ব্যাংকের সদরঘাট শাখা, সাউথইস্ট ব্যাংকের কাকরাইল শাখা, ওয়ান ব্যাংকের বাসাবো শাখা, ব্র্যাক ব্যাংকের শ্যামলী শাখা, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের দক্ষিণখান এসএমই অ্যান্ড এগ্রিকালচার শাখা, দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংকের বনানী শাখা, ব্যাংক এশিয়া ধানমন্ডি শাখা, দ্য সিটি ব্যাংকের বেগম রোকেয়া সরণি শাখা, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের নন্দীপাড়া শাখা, প্রাইম ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখা, এক্সিম ব্যাংকের শিমরাইল শাখা, ইসলামী ব্যাংকের গাজীপুর চৌরাস্তা শাখা, ইউসিবিএল গাজীপুর চৌরাস্তা শাখা, উত্তরা ব্যাংকের সাভার শাখা, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাভার শাখা এবং ট্রাস্ট ব্যাংকের কেরানীগঞ্জ শাখায় নতুন টাকা পাওয়া যাবে।
বিএসডি/ এমআর