ভ্যাট আইন ব্যবসাবান্ধব ও যুগোপযোগী করতে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাটের আগাম কর (এটি) হার কমানো হচ্ছে। ভ্যাট ফাঁকির জরিমানা ও সরল সুদ দুটিতেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আদায় বাড়াতে বাজেটে মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হচ্ছে।
আসন্ন ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ৬ লাখ কোটি টাকার বেশি প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্যের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ’।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে এ বিষয়ে জানা যায়, বিদ্যমান ভ্যাট আইনটি আরও ব্যবসাবান্ধব ও যুগোপযোগী করতে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাটের আগাম কর (এটি) হার কমানো হচ্ছে। ভ্যাট ফাঁকির জরিমানা ও সরল সুদ দুটিতেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে। আগাম কর হার ৪ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ করা হচ্ছে।
আর ভ্যাট ফাঁকির জরিমানা ও সরল সুদ হার দুটিই বাণিজ্য সহায়ক করতে যৌক্তিক করা হচ্ছে। বর্তমানে ভ্যাট ফাঁকির ক্ষেত্রে ফাঁকি দেওয়া ভ্যাটের দ্বিগুণ জরিমানা আরোপের বিধান রয়েছে। আগামী বাজেটে আগাম কর কমিয়ে ভ্যাট ফাঁকির সমপরিমাণ জরিমানার বিধান করা হচ্ছে। এছাড়া সময়মতো ভ্যাট না দিলে ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সরল সুদের বিধান রয়েছে, যা আসছে বাজেটে এক শতাংশ করা হতে পারে।
অন্যদিকে ভ্যাট আদায় বাড়াতে মনিটরিং জোরদার করা হচ্ছে। রিটার্নের সঙ্গে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আর্থিক বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান রেখে ভ্যাট আইন সংশোধন করা হচ্ছে। এজন্য আইনে নতুন ধারা যুক্ত করা হচ্ছে। বর্তমানে আর্থিক বিবরণী জমা দিতে হয় না। আইন সংশোধন করে একবছরের আর্থিক বিবরণী পরবর্তী বছরের প্রথম ৬ মাসের (কর মেয়াদ) মধ্যে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হচ্ছে।
এছাড়া রাজস্ব সুরক্ষায় জাল ও নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেটের বিস্তার রোধে জেল-জরিমানার বিধান রেখে আইনে নতুন ধারা যুক্ত করা হচ্ছে। ফলে আগামীতে জাল বা ভুয়া বা ব্যবহৃত স্ট্যাম্প-ব্যান্ডরোল ব্যবহার করলে অথবা জাল ব্যান্ডরোল উৎপাদন, সংরক্ষণ, পরিবহন, বাজারজাত করলে একবছরের বেশি কারাদণ্ড বা প্রদেয় করের সমপরিমাণ অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। শুধু তাই নয়, নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত কোনো পণ্য উৎপাদন, গুদামজাতকরণ, পরিবহন, বিপণন বা বিক্রি করলেও একই সাজা ভোগ করতে হবে।
দেশে মোট রাজস্ব আয়ের শতকরা ১০ ভাগ আসে তামাক খাত থেকে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই খাত থেকে সরকার প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করে। তবে অবৈধ ব্যবসা ও শুল্ক ফাঁকি দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কারসাজিতে বিগত দুই বছরে সরকার হারিয়েছে দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব।