গত মৌসুমে জুভেন্টাস থেকে বার্সায় যোগ দেওয়ার পর পিয়ানিচ সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে কাতালানদের হয়ে মাঠে নামেন মাত্র ৩০ ম্যাচে। এর মধ্যে ১৩ ম্যাচে শুরুর একাদশে এবং মাত্র ৫ ম্যাচে পুরো ৯০ মিনিট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। অথচ পিয়ানিচ আশা করেছিলেন, কোচ তাঁকে আরও বেশি খেলার সুযোগ দেবেন।
বার্সার মাঝমাঠে সের্হিও বুসকেতস, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং ও পেদ্রিকেই বেশি পছন্দ কোমানের। কিন্তু পিয়ানিচকে কতটা মূল্যায়ন করতেন কোমান, সেটি বোঝা গেছে গত মৌসুমে যখন পিয়ানিচের চেয়েও একাডেমি থেকে উঠে আসা তরুণ মিডফিল্ডার ইলাইশ মরিবাকে বেশি খেলিয়েছেন ডাচ্ কোচ। সেই মরিবা যদিও বেশি বেতন চেয়ে উল্টো বার্সার বিরাগভাজন হয়েছেন, শেষ পর্যন্ত তাঁকে জার্মানির লাইপজিগের কাছে বিক্রিই করে দিয়েছে বার্সা। কিন্তু মরিবা যাওয়ার পরও পিয়ানিচকে রাখার চেষ্টা করেনি বার্সা।
আর্থিকভাবে নড়বড়ে বার্সা বেতনের বিল কমাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত যে খেলোয়াড়দের বিক্রি করে বা ধারে অন্য ক্লাবে পাঠানোর চেষ্টা করেছে এবারের দলবদলের মৌসুমজুড়ে, তার মধ্যে প্রথম দিকেই ছিলেন পিয়ানিচ। তুরস্ক যাওয়ার আগে অবশ্য বার্সার সঙ্গে আগের চুক্তি থেকে বেতন কমিয়ে গেছেন পিয়ানিচ।
কিন্তু কোমানের প্রতি ক্ষোভটা তাঁর যায়নি। বার্সায় অন্য মিডফিল্ডাররা থাকলেও এত কম ম্যাচ খেলতে হবে, সেটা মোটেও ভাবতে পারেননি পিয়ানিচ।
স্প্যানিশ দৈনিক মার্কার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বার্সায় তাঁকে অসম্মান করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তাই ৩১ বছর বয়সী মিডফিল্ডার বললেন, ‘হ্যাঁ, কোচ অসম্মান করেছেন। আমি গত বছর যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলাম, তাতে মানিয়ে নিতে পারিনি। এমন কিছু তো আমি চাইনি! আমি একজন খেলোয়াড়, ফুটবল খেলতে ভালোবাসি। আর এটাই আমাকে সব সময় আনন্দ দেয়। সব সময়ই বার্সার হয়ে খেলতে চেয়েছি, কিন্তু সবকিছু এত জটিল হয়ে যাবে বুঝিনি।’
কোমানের আচরণ অবাক করত পিয়ানিচকে, ‘এটা খুবই অবাক করার ব্যাপার ছিল। কে খেলবে, কে খেলবে না, সেটা কোচই ঠিক করেন, কিন্তু সেটা করার অনেক পদ্ধতি তো আছে! আমি এমন একজন ফুটবলার যে সবকিছু মেনে নিতে পারি, কিন্তু (কোচ) সবকিছু সরাসরি বলবেন, এটাই আশা করি। কিন্তু সেখানে এমন হয়েছে, যেন কিছুই হয়নি, যেন আমি ১৫ বছর বয়সের একটা ছেলে।’
তবে কি বার্সায় যোগ দেওয়া মস্ত বড় ভুল ছিল পিয়ানিচের? সেটা অবশ্য কখনোই মনে হয়নি তাঁর, ‘না। কখনোই বার্সায় যোগ দেওয়ার জন্য আক্ষেপে পুড়িনি আমি। জীবনে যা হবে তা হবেই। আমি আমার পুরো জীবনেই এবং ক্যারিয়ারজুড়েই লড়াই করেছি। আমি খুবই উচ্চাভিলাষী, লড়াকু। আমি জুভেন্টাস ও বার্সায় যোগ দেওয়ার মতো পর্যায়ে পৌঁছেছি। আমি জানি যে এই দলে (বার্সা) খেলতে পারি। কিন্তু ওরা আমাকে খেলার, লড়াই করার, দলের একজন হয়ে ওঠার, দলকে সাহায্য করার সে সুযোগটাই দেয়নি।’
বার্সায় নিজের অবস্থান বুঝতে পেরে চলতি গ্রীষ্মে পুরোনো ঠিকানা জুভেন্টাসে পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন পিয়ানিচ। দুই ক্লাবের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় সেটাও সম্ভব হয়নি। তাই আগামী এক বছর তুর্কি ক্লাবটির হয়েই খেলতে হবে এই ফুটবলারকে।
বার্সায় বেতন কমানোর পর তাঁর যে বেতন ছিল, সেটি বার্সা ও বেসিকতাস—দুই ক্লাব এখন ভাগাভাগি করে দেবে বলেই জানাচ্ছে স্প্যানিশ দৈনিক স্পোর্ত।
বিএসডি/এএ