আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে যখন এই হামলা চালানো হয় তখন ওই ভবনে নেতানিয়াহু ছিলেন না।
এই হামলা ও হত্যাচেষ্টার জন্য ইরানকে দোষারোপ করেছেন তিনি। যদিও লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এই হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। রোববার (২০ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, উত্তর ইসরায়েলের সিজারিয়া শহরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলার কয়েক ঘণ্টা পরে নেতানিয়াহু একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
সেখানে তিনি বলেন, “আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে হত্যা করার জন্য ইরানের প্রক্সি হিজবুল্লাহর প্রচেষ্টা মারাত্মক ভুল।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ইরান ও তার প্রক্সিদের এবং তার অশুভ অক্ষকে বলছি, যারাই ইসরায়েলের নাগরিকদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে তাদেরকে চড়া মূল্য দিতে হবে।
এদিকে এই বিবৃতি জারি হওয়ার পরপরই, নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ অজ্ঞাতনামা কূটনৈতিক সূত্র ইসরায়েলি মিডিয়ায় বলেছে, নেতানিয়াহুকে হত্যা প্রচেষ্টার পেছনে তারাও ইরানকে দায়ী বলে মনে করছে এবং এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
এর আগে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, শনিবার উত্তর ইসরায়েলি শহর সিজারিয়াতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বাড়ির দিকে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। যখন এই হামলাটি চালানো হয় তখন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ওই ভবন কিংবা এর আশপাশেও ছিলেন না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হয়েছে, হামলায় যে ভবনটি আঘাত হেনেছে সেটি নেতানিয়াহুর বাড়ির অংশ। টাইমস অব ইসরায়েলে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলায় কোনও আহতের খবর পাওয়া যায়নি এবং প্রধানমন্ত্রী ওই সময় বাড়িতে ছিলেন কি না তা স্পষ্ট নয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, লেবানন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ড্রোনটি। তবে এটি অন্য একটি ভবনে আঘাত হানে। সেই ভবনটিতে কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তা স্পষ্ট হয়নি।
একই সময় মোট তিনটি ড্রোন ছোড়া হয়েছিল ইসরায়েলের দিকে। তবে ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অন্য দুটি ড্রোন ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশের আগেই ঠেকিয়ে দেয়। ওই হামলার কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইডিএফ।
ইসরায়েলি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এবং পুলিশ বলছে, উপকূলীয় শহর সিজারিয়ায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আর এই সিজারিয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ‘হলিডে হোম’ বা অবকাশকালীন বাড়ি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলে বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। আর নেতানিয়াহু বাড়িতে হামলার ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন আগের হামলার জবাবে ইরানের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল।
অবশ্য ইরানে পাল্টা হামলার পক্ষে থাকলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রকাশ্যেই ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার বিরোধিতা করেছেন। একইসঙ্গে ইরানের জ্বালানি অবকাঠামোতে সম্ভাব্য হামলার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
তবে ইসরায়েল ইরানের সামরিক অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ করবে বলে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন।