পর্তুগালে সাশ্রয়ী মূল্যে সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করার দাবিতে লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দেশব্যাপী মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে যোগ দেন।
পর্তুগালে বাড়িভাড়া ও বাড়ির দাম বেড়েই চলেছে। বাড়িভাড়া বিবেচনায় দেশটি বর্তমানে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ইউরোপের সর্বোচ্চ বাড়ি ভাড়ার শহর নেদারল্যান্ডের রাজধানী আমস্টারডামের চেয়েও গড়ে মাসিক ২০০ ইউরো বেশি ভাড়া গুনতে হয় পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বসবাসকারীদের।
বর্তমানে পর্তুগালে চলমান আবাসন সংকটের পেছনে অপরিকল্পিত আবাসন পরিকল্পনা ও সরকারের সময়োপযোগী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অভাবকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাস্তবেও এসবের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কেননা, গত বছরই পর্তুগালে আবাসন মন্ত্রণালয় নামে নতুন একটি মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করা হয় এবং এর জন্য মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়। আগে এটি অন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পর্তুগালের বিভিন্ন শহরে অনেক পুরোনো বাড়ি সংস্কারের অভাবে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তাছাড়া পর্যটন আকর্ষণীয় হওয়ায় লাভজনক হিসেবে আবাসিক বাড়িগুলো হোস্টেল হিসেবে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে, অভিবাসীদের উচ্চ চাপ এর অন্যতম একটি কারণ।
স্থানীয় সময় শনিবার বিকেল ৩টায় রাজধানী লিসবনের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া পর্তুগিজ নাগরিক সন্তোষ সিলভা বলেন, ‘আমার পুরো বেতনের অর্থ দিয়ে ভাড়া প্রদান করতে হয়। আমার স্ত্রী যে বেতন পান তা দিয়ে আমরা বাকি ব্যয় বহন করি। এটা কোনো জীবন হতে পারে না। কেননা, আমার আয়ের চেয়েও বাড়িভাড়া বেশি।’
দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন সোশ্যালিস্ট পার্টি সরকার গত সপ্তাহে নতুন আবাসন বিল অনুমোদন করেছে। তবে এই আবাসন বিলের বিধিনিষেধ বাড়িভাড়ার উচ্চ মূল্যে লাগাম টেনে ধরতে পারছে না। সংসদের বিরোধী দলগুলো এই বিলকে অপ্রতুল এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ আখ্যায়িত করে এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। এমনকি রাষ্ট্রপতিও বিলটি অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
কাজা পারা ভিভের অর্থাৎ ‘বসবাসের জন্য বাড়ি’ স্লোগানে বন্দরনগরী পর্তোতেও শহরের প্রধান স্কয়ারে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন হয়। তাছাড়া ব্রাগা, গুইমারেস, ভিসেউ, কোভিলহা, বারেইরো, বেজা, আভেইরো, কোইমব্রা ও ফারোর মতো শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তায় এবং স্কয়ারে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিএসডি/এমএম