নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিম্নমুখী হওয়ায় মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে আবারও শুরু হতে যাচ্ছে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম।
দীর্ঘ ৩ বছর পর এদিন বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দলটির নির্বাহী কমিটি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ধারাবাহিক সভা। সভাগুলোর আলোচ্য বিষয়ে নির্ধারিত কোনো এজেন্ডা না থাকলেও আগামী দ্বাদশ নির্বাচন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ে আন্দোলনের রূপরেখা আলোচনায় প্রাধান্য বলে মনে করছেন দলটির নেতারা।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপির তিন দিনের ধারাবাহিক বৈঠকের শুরুর দিন আজ অংশ নেবেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। সভায় লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভাপতিত্ব করবেন। এছাড়া দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির নেতারাও উপস্থিত থাকবেন।
বিএনপি নেতারা বলছেন, বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়ে দলের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা দেওয়া হয়নি। আর তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাহী কমিটির নেতাদের সঙ্গে এটিই তার প্রথম সভা। এর আগে গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে তারেক রহমানের নেতৃত্বে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে সভা হয়েছিল। তখন নির্বাচনকেন্দ্রীক আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু এবার নির্বাচনের চেয়ে আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে বেশি আলোচনা হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া মানে জেনেশুনে পরাজয় মেনে নেওয়া। তাই আগে নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের দাবিতে কীভাবে মাঠে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে তার কর্ম-কৌশল ঠিক করাই এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। সেটিই বৈঠকের আলোচনা বিষয় হওয়া উচিত।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে নির্ধারিত কোনো এজেন্ডা নেই। আমার ধারণা দলের সাংগঠনিক-রাজনৈতিক ও আগামী দিনে আমাদের কর্মপরিকল্পনা কী হতে পারে সেটিই আলোচ্য বিষয় হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এই সরকারের অধীনে তো আমরা কোনো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না। ফলে আগামী সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হতে হবে। সেজন্য যা করা দরকার সেটাই আমরা করব
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, বিএনপির আর হারানোর কিছুই নেই। এখন অবস্থা এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে, আমাদের নামে যেসব মামলা আছে সেগুলো পরিচালনা করার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই অনেকের। ফলে ঘরে বসে না থেকে নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচনের দাবিতে রাস্তায় নেমে গুলি খেতেও কোনো সমস্যা নেই। কারণ এই বুড়ো বয়সে ঘরে বসে থেকে মরার চেয়ে রাস্তায় নেমে মরা অনেক ইজ্জতের।
তিনি আরও বলেন, আজকের বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় হওয়া দরকার আগামী দিনের আন্দোলনের রূপরেখা কী হবে তা নিয়ে। তারপর নির্বাচনী ইস্যু। এখন এই পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে তারেক রহমানের মনোভাবের ওপর। তিনি আসলে কীভাবে বিষয়গুলো নেবেন, নেতারা আসলে কতটুকু স্বাধীনভাবে তাদের মতামত দিতে পারবে তার ওপর।
বিএনপির দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স জানান, ধারাবাহিক বৈঠকগুলোতে বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক, সহ-সম্পাদক এবং বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন।