নিজস্ব প্রতিবেদক
মোটরসাইকেল বহর ও কারসহ অন্য কোনও যানবাহনে শোভাযাত্রা না করতে বিএনপির নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেন না বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা। দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় শোডাউন, মোটরবাইক শোডাউন অব্যাহত রয়েছে।
সর্বশেষ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) নোয়াখালীর হাতিয়ায় এমন শোডাউনের খবর পাওয়া গেছে।
দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত জনসভার আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের অনুসারীরা এই শোডাউন করেন।
দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম তার অনুসারীদের নিয়ে নোয়াখালী জেলার হাতিয়ায় মোটরসাইকেল শোডাউন করেন। কয়েক শতাধিক মোটরসাইকেল যোগে শোডাউনের করে সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার সময় রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়, এতে সাধারণ মানুষকে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যার কারণে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
মাহবুবের অনুসারীরা বলছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৬ হাতিয়া আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। তাই আজকে নিজের অনুসারীদের নিয়ে শোডাউন দিয়ে জনসভায় যোগ দিয়েছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও তৃণমূল পর্যায়ে চিঠি পাঠিয়ে শোডাউন বন্ধ করার নির্দেশনা দেয় বিএনপি।
দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা ওই চিঠিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাসহ সংশ্লিষ্ট সবার উদ্দেশে বলা হয়, ‘আপনাদের অধীন কোনও ইউনিটে সাংগঠনিক কাজের উদ্দেশ্যে সফরকালে কোনও মোটরসাইকেল বহর ও কারসহ অন্য কোনও যানবাহনে শোভাযাত্রা পরিহার করতে হবে। এসব শোভাযাত্রার কারণে পাশ দিয়ে চলাচলরত সাধারণ মানুষের যানবাহন বা পথচারীদের যাতায়াতে ভয়ানক বিঘ্ন ঘটে।’
এর আগে দলীয় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শোডাউন করায় শোকজ করা হয় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকনকে। এছাড়া একই অপরাধে খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব নুরুল আমিন বাবুল, নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তানভীর উদ্দীন রাজিবসহ অনেকে সাংগঠনিক শাস্তি পেতে হয়েছে।
বিএনপির দপ্তর সূত্র জানায়, বিগত কয়েক মাসে এক হাজারের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে কেবল অক্টোবরের মধ্যেই ১ হাজার ২৩ জন নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৫২৩ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, ৪৩৭ জনকে বহিষ্কার, ২৪ জনের পদ স্থগিত, ৩৫ জনকে সতর্ক এবং ৪ জনকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের নোটিশ দেওয়া হয়।