নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি ৩১ দফা বাস্তবায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্বাচনের পর তারেক রহমান জাতীয় সরকারের গঠন করে সবার মতামতের ভিত্তিতে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবেন। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলন ড্রাইভ করেছে বিএনপি। এই আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি ছিল তারেক রহমান ও খালেদা জিয়া।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকে অনেকেই এই আন্দোলনের ক্রেডিট নিতে চায়। অথচ তারা আন্দোলন শুরুর অনেক পরে এসেছে। তারা জানে না বিদেশে কীভাবে আন্দোলন হয়েছে। লন্ডন, ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যে কীভাবে আন্দোলন হয়েছে তারা জানে না। ইতিহাস সংরক্ষণ না করলে তা ভবিষ্যৎ ইতিহাসে জায়গা পাবে না। তাই প্রবাসীদের এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ বই বা ডকুমেন্ট করে জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় বিএনপি সর্বোচ্চ সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পতনের ব্যাপারে প্রবাসীদের অনেক ভূমিকা আছে। কিন্তু, দুঃখের বিষয় আমরা অনেকেই দেশের ভেতরে সেটি অনুধাবন করতে পারিনি। শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে বিভিন্ন গোষ্ঠী; যারা ত্যাগ স্বীকার করেছে, যে যার অবস্থান থেকে আন্দোলন করেছে, সেটাও আমরা তুলে ধরতে সক্ষম হয়নি। এই সফলতার কৃতিত্ব নিয়ে দেশে আমাদের মধ্যে কোনো বিভক্তি হোক, সেটা একবারেই কাম্য নয়। অনেকে মনে করেছেন প্রবাস থেকে আন্দোলন করা অনেক সেইফ ছিল। কিন্তু, এটা ভুল । কারণ, দেশে প্রবাসীদের আত্মীয়-স্বজনদের অনেক নিগৃহীত হতে হয়েছে। আবার প্রবাসেও আন্দোলন করা সহজ বিষয় ছিল না। অনেক কঠিন ব্যাপার ছিল।
তিনি আরও বলেন, রেমিট্যান্স যোদ্ধারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে যুদ্ধ করেছে, আবার রেমিট্যান্স বন্ধ করেও যুদ্ধ করেছে। আমি প্রবাসীদের এই অবদানের জন্য একটা অনুরোধ করবো। সেটি হলো শেখ হাসিনার পতনের পেছনে আপনাদের (প্রবাসী) যে অবদান, সেটিকে আপনারা একটি ডকুমেন্ট হিসেবে তৈরি করুন এবং একটি বই তৈরি করুন। এই আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে যারা কথা বলছে, তাদের প্রবাসীদের আন্দোলনগুলো দেখে উচিত। প্রবাসীরা শেখ হাসিনার পতনের জন্য কাজ করেছে এবং এ আন্দোলনের অন্যতম অংশীদার। এই আন্দোলনের পেছনে নেতৃত্ব দিয়েছে তারেক রহমান। উনি (তারেক রহমান) হচ্ছেন মূল শক্তি। এই পুরো আন্দোলনকে ড্রাইভ করেছে বিএনপি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ বলেন, স্বীকার করছি, আমাদের চেয়ে প্রবাসীরা বেশি দেশপ্রেমিক। এখন বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল পার করছে। মানুষ যদি বলে, আগেই ভালো ছিলাম। এর চেয়ে লজ্জার কিছু নেই। মিডিয়া এখনো স্বৈরাচারের দোসররা আছে। এ বিষয়ে কিছু করতে পারিনি। সরকার কী সংস্কার করছে বুঝে আসছে না? তারা তো আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। তাই বলতে চাই, সম্মানের সঙ্গে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট, গিয়াস আহমেদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ জুলি, সুইডেন বিএনপির সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, ফ্লোরিডা বিএনপির সভাপতি এমরান হক চাকলাদার, আব্দুল খান হারুন, অস্ট্রেলিয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতিব মুসলেমউদ্দীন হাওলাদার আরিফ প্রমুখ।