নিজস্ব প্রতিবেদক
বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ক্রয় চুক্তির ট্যারিফ (বিদ্যুতের দাম) পর্যালোচনা করতে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিভাগ এ কমিটি গঠন করেছে।
দায়মুক্তি আইন হিসেবে পরিচিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনটি বাতিল করা হয়েছে গত নভেম্বরে। এর আগে এই আইনের অধীন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আওয়ামী সরকারের করা চুক্তিগুলো পর্যালোচনায় একটি কমিটি করে দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এবার বিদ্যুতের দাম পর্যালোচনায় করা হলো আরেকটি কমিটি।
গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অধ্যাপক মো. কামরুল আহসানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের উপসচিব (উন্নয়ন-১) মোহাম্মদ সোলায়মানকে। অন্য সদস্যরা হলেন- বিদ্যুৎ খাতের সংস্কার কমিটির আর্থিক মডেলিং বিশেষজ্ঞ ও পাওয়ারসেলের পরামর্শক তোহা মুহাম্মদ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুর আলম, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (অর্থ) অঞ্জনা খান মজলিশ ও পরিচালক (ক্রয় পরিদপ্তর) মো. নান্নু মিয়া।
উচ্চ পর্যায়ের এ কমিটি বিদ্যুৎ-জ্বালানির বিশেষ বিধান বা ‘দায়মুক্তি আইনের’ আওতায় নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ক্রয় চুক্তিতে অসঙ্গতি খুঁজে বের করে এ সংক্রান্ত সুপারিশ করবে। পাশাপাশি বিশেষ আইনে করা ফার্নেস তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর বিদ্যুতের দাম পর্যালোচনা করে তা কমানো যায় কিনা সে সুপারিশও করবে। বিদ্যুৎ বিভাগের অফিস আদেশে বলা হয়, কমিটিতে প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কোনো সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ রয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনের আওতায় ৯১টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হয়েছে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা ছাড়াই। এসব চুক্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আছে। বিগত সরকারের পছন্দের বিশেষ কিছু ব্যক্তিকে এসব কেন্দ্রের কাজ দেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রগুলো থেকে যে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে তাতে ব্যয় অনেক বেশি পড়ছে।
‘দায়মুক্তি আইনের’ অধীনে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতে যাওয়া যাবে না। দীর্ঘদিন ধরে এটি বাতিলের দাবি তোলা হলেও আওয়ামী লীগ সরকার তা আমলে নেয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আইনটি বাতিল করা হয়। এখন কেন্দ্রগুলোর চুক্তি পর্যালোচনা করা হবে।
বিশেষ বিধান আইনটি করা হয় ২০১০ সালে। এরপর দফায় দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। এই আইনের অধীন নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। এর কারণে এটি দায়মুক্তি আইন হিসেবে পরিচিত। এই আইনের অধীন দরপত্র ছাড়া একটার পর একটা চুক্তি করেছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার।