স্পোর্টস ডেস্ক:
টি-টোয়েন্টিতে ভালো খেলতে হলে কী করতে হবে? মুখে হাসির ভাব রেখে নাসুম আহমেদ যেটা বললেন সেটা হলো, ‘ভালো খেলতে হবে।’
তার ওই হাসিতে বিধ্বস্ততার ছাপ! পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে মাঠের হাহাকার, হতশ্রী পারফরম্যান্স, একের পর এক হারের ধকল। বেশ কয়েকবার মুখে প্রাণবন্ত হাসি আনার চেষ্টা করেছিলেন। পারেননি! মনে হচ্ছিল, মাঝ সমুদ্রে অথৈ জলে ভাসছেন…পাচ্ছেন না কুল কিনারা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে একমাত্র নাসুমই ব্যাট হাতে-বল হাতে সরব ছিলেন। ১৯তম ওভারে তার ব্যাট থেকেই আসে ইনিংসের দুই ছয়। তার ৯ বলে অপরাজিত ১৯ রানের বদৌলতে বাংলাদেশ ১২৪ রানের পুঁজি পায়। বোলিংয়ে ইংলিশ শিবিরে শুরুর ধাক্কাটা তিনিই দিয়েছিলে। পরে সীমানায় দারুণও ক্যাচও নেন। এতো কিছু করেও নাসুম জেতাতে পারেননি বাংলাদেশকে। কারণ বাকিরা ছিলেন নিষ্প্রভ।
আবুধাবিতে কন্সট্রাকশনে কাজ করেন চাঁদপুরের শফিকুল ইসলাম। প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূর থেকে কাজ বাদ দিয়ে গাঁটের পয়সা খরচ করে ছুটে এসেছেন বাংলাদেশের ম্যাচ দেখতে। বাংলাদেশ পুরো ম্যাচে লড়াই করতে পারেননি। ক্ষুদ্ধ এই দর্শক প্রশ্ন তুলেছন বাংলাদেশের খেলার নিবেদন নিয়ে, শারীরিক ভাষা নিয়ে তার যত আপত্তি!
রাউন্ড ওয়ানে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও মাহমদুউল্লাহ রিয়াদদের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তার জবাবে বাংলাদেশ অধিনায়ক শুনিয়েছেন পেইন কিলার খেয়ে তাদের খেলার গল্প। বলেছেন সমালোচনা হোক, কিন্তু ছোট করা ঠিক নয়। আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম দুদিন আগে, সমালোচকদের আয়ানায় মুখ দেখতে বলেছেন।
ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ডকে উড়িয়ে বিশ্বকাপে পা রেখেছিল বাংলাদেশ। লাল সবুজের দেশের কাছে সবার প্রত্যাশা আকাশছোঁয়া থাকবে তা অনুমিতই ছিল। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সে ক্রিকেটাররা ছন্নছাড়া। শুরু থেকে শেষ-একছত্র কতৃত্ব বজায় রেখেছিল ইংলিশরা।
এমন ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নাসুম ভেঙ্গে পড়লেন, ‘পারছি না। ভাগ্য খারাপ। আমাদের দিয়ে হচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ভালোভাবে মাঠে প্রয়োগ করতে পারছি না।‘
এমন দুর্ভাগ্যের দিন ছাপিয়ে কবে সৌভাগ্যের সোনা মাখা সময় আসবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে? ক্রিকেটার, ক্রিকেট কর্তারা-তো বড় বড় কথাই বলে যাচ্ছেন, তাদের কথা কাজে আসবে কবে?
বিএসডি/এসএসএ