স্পোর্টস ডেস্ক
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের সূর্যটা কিছুটা জ্বলে আবার নিভু নিভু পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার দৃশ্য সাম্প্রতিক সময়ে স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর তারা চলতি বছরে হওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও অংশ নিতে পারেনি। তবে একটু একটু করে ফের ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল চারটি বিশ্বকাপ ও একবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিজয়ীরা। এরই মাঝে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২৭ রানে অলআউটের সঙ্গে এলো ৩-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হারের লজ্জা!
নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজে অজিদের সামনে পুরোদমে অসহায় ছিল ক্যারিবীয়রা। সিরিজের প্রথম দুই টেস্টেও বড় ব্যবধানে (১৫৯ ও ১৩৩ রান) হেরেছে। এরপর জ্যামাইকায় তৃতীয় ও শেষ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২০৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ ইনিংসে উইন্ডিজরা মাত্র ১৪.৩ ওভারে ২৭ রানে অলআউট হয়ে যায়। মাত্র ১ রানের জন্য তারা টেস্টের সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে ঠিকই ঘুম উড়ে গেছে উইন্ডিজ ক্রিকেটার ও সমর্থকদের।
বিপর্যস্ত সিরিজ শেষে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই) জরুরি বৈঠক ডেকেছে, যেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় সাবেক তিন কিংবদন্তি অধিনায়ক ব্রায়ান লারার, স্যার ক্লাইভ লয়েড ও স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসকে। এ ছাড়া ওই সভায় ছিলেন শিভনারায়ণ চন্দরপল, ডেসমন্ড হেইনেস ও ইয়ান ব্র্যাডশ’র মতো সাবেক তারকারা। উইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড ৩-০ ব্যবধানে হারকে ‘গভীর হতাশাজনক’ উল্লেখ করে ‘ক্রিকেট স্ট্র্যাটেজি এন্ড অফিসিয়েটিং কমিটি’ কিংবদন্তিদের উপস্থিতিতে পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করেছে।
ঘরের মাঠে বিব্রতকর হারের পর নিদ্রাহীন রাত কাটানোর কথা জানিয়ে সিডব্লুআই সভাপতি ড. কিশোর শ্যালো বলছেন, ‘অন্য সকল ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান সমর্থকের মতো আমিও অস্ট্রেলিয়ার কাছে টেস্ট হারের ব্যথা অনুভব করছি। ক্রিকেটারসহ আমাদের অনেকের জন্যই কিছু নিদ্রাহীন রাত আসছে, যারা এই হারে বড় ধাক্কা খেয়েছে। হতাশার বিষয়টি স্বাভাবিক, তবে এটিকেই আমাদের যাত্রাপথ সংজ্ঞায়িত করতে দেবো না। আমরা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় আছি, ধৈর্য্যের সঙ্গে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বিনিয়োগ করছি এবং বিশ্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের অসামান্য অর্জনকে প্রেরণা হিসেবে নিয়ে উজ্জ্বীবিত হতে চাই।’
লয়েড-রিচার্ডস-লারাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও পরামর্শ এই পরিস্থিতি কাটাতে ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন কিশোর শ্যালো, ‘এই মানুষরা আমাদের সোনালি যুগের গর্ব, যাদের হাতে তৈরি হয়েছিল দুর্দান্ত দল। তাদের অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের দারুণভাবে সাহায্য করবে। এই আলোচনার লক্ষ্য বাস্তব পরিকল্পনা বের করে আনা।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরেই আমি একটি বার্তা দিয়ে আসছি, এই মুহূর্তটা সমন্বয়ের, বিভাজনের নয়। সমর্থক, খেলোয়াড়, কোচ, কিংবদন্তি এবং সংগঠক– সবাইকে আমাদের বোর্ডে প্রয়োজন।’
‘অনেক কিছু করার বাকি, কিন্তু সেটা করতে হবে লক্ষ্য ঠিক রেখে, সম্মিলিতভাবে’, আরও যোগ করেন উইন্ডিজ ক্রিকেটের সভাপতি কিশোর শ্যালো। টেস্ট সিরিজ শেষে এবার ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে লড়বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়া। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের সিরিজটি শুরু হবে ২১ জুলাই থেকৈ।