জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির (জেএনইউডিএস) আয়োজনে বিশেষ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৪ অক্টোবর (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচতলায় এই ‘ছায়া সংসদ’ বিতর্কের আয়োজন করা হয়।
এই সংসদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের গৃহীত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে,’ বিষয়কে কেন্দ্র করে সরকারি এবং বিরোধী দলের সদস্যরা তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
এতে সরকারি দলের প্রতিনিধি হিসেবে পক্ষে বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন, মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, তৌফিকুল ইসলাম হৃদয়, জহির উদ্দিন এবং বিরোধী দলের প্রতিনিধি হিসেবে বিপক্ষে অংশগ্রহণ করেন, মোঃ সোহেল রানা, মোঃ মোর্শেদ হাসান আসিফ, নাঈমা আক্তার রিতা।
বিতর্ক অনুষ্ঠানে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মো. সাইদুল ইসলাম সাঈদ। বিচারক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাজু এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ময়না আক্তার।
বিতর্কে সরকারদলীয় সদস্যরা বলেন, যেহেতু দেশে বর্তমানে একটি সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের ঘাটতি রয়েছে, তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যয় কমিয়ে আনার জন্য স্বল্প পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি।
অপরদিকে বিরোধী দলের সদস্যরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের কোনো ঘাটতি নেই, যদি ঘাটতি থাকে সেটা প্রশাসনের সদিচ্ছার।
বিরোধী দলের সদস্যরা আরও বলেন গত বেশ কিছু বছর যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে তেমন কোন বিনোদনের আয়োজন করা হয়নি। করোনা পরবর্তী সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিক বিষাদ দূর করার জন্য বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্প নেই। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গৃহীত সিদ্ধান্ত বিরোধিতা করছি।
বিতর্কে দুই দল তাদের মতের পক্ষে এবং বিপক্ষে যুক্তি এবং মতামত উপস্থাপন করেন। বিতর্ক শেষে বিচারক মন্ডলী বিজয়ী দল বাছাই করার দায় ভার উপস্থিত দর্শকদের উপর ছেড়ে দেন।
অনুষ্ঠান সম্পর্কে ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মো. সাইদুল ইসলাম সাঈদ বলেন, ‘বিতর্ক সংগঠন এমন একটি সংগঠন যারা বিভিন্ন সমসাময়িক সমস্যা বা ইস্যু নিয়ে যৌক্তিক তথ্য, তত্ত্বের মাধ্যমে সমাধান করে। তারই ধারাবাহিকতায় জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি- আগামী ২০ অক্টোবর ১৭তম আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রশাসন কর্তৃক যে সিদ্ধান্ত বা নোটিশ এসেছে এগুলো নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে লেখালেখি এবং সমালোচনা হচ্ছে।
বিতর্কের মাধ্যমে আমরা দুই পক্ষের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করলাম কোন সিদ্ধান্তটি বা কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরো বেশি উপভোগ এবং আনন্দ করতো। বিতর্কের মাধ্যমে এইসব সিদ্ধান্ত এসেছে যে প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় ম্যাগাজিন প্রকাশ, আরো সুন্দর ভাবে সাজসজ্জা, সারা বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে নতুন নতুন সৃজনশীল কার্যক্রম যুক্ত করা, হতে পারে নিরাপত্তার সাথে বড় পরিসরে কনসার্ট, বাজেট বৃদ্ধি করা সহ আরো সুন্দর পরিকল্পনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা সম্ভব।’
উল্লেখ্য, আগামী ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দিনব্যাপী কর্মসূচি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যেখানে তুলনামূলক বিনোদনের ব্যবস্থা না রাখায় এবং বড় পরিসরে কোনো আয়োজন না থাকায় সিদ্ধান্তটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা জন্ম দেয়। বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ-প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকে।
বিএসডি/এফএ