সাইবার হামলার কবলে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাংস প্রক্রিয়াজাত ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেবিএস। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেবিএসের কম্পিউটার সিস্টেমে এই সাইবার হামলার ঘটনা ঘটে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় সাময়িকভাবে কোম্পানিটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে কোম্পানিটির হাজার হাজার শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
হোয়াইট হাউস বলছে, জেবিএস মনে করছে, রাশিয়ার কোনো অপরাধী গোষ্ঠী থেকে এই সাইবার হামলা হয়েছে। এই হামলার কারণে বিভিন্ন জায়গায় মাংসের ঘাটতি হতে পারে, এ ছাড়া দাম বৃদ্ধির আশঙ্কাও করা হচ্ছে। তবে খাদ্যের দাম যাতে বেড়ে না যায়, এ লক্ষ্যে জেবিএস কাজ করছে বলে হোয়াইট হাউসকে জানিয়েছে তারা।
কম্পিউটারের র্যানসমওয়্যার হামলা হলে হার্ডডিস্কের সব ডেটা হ্যাকারদের কাছে চলে যায় এবং ওই ডেটা ফেরত আনার জন্য অর্থ দিতে বলা হয়। অর্থ দিলেও যে কম্পিউটারের সমস্ত ডেটা ফেরত দেবে হ্যাকাররা, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্ত করছে তারা।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জিন-পিয়েরে বলেন, জেবিএস জানিয়েছে যে অর্থের দাবিটি রাশিয়াভিত্তিক একটি অপরাধমূলক সংস্থা থেকে এসেছে বলে মনে করছে তারা। হোয়াইট হাউস এই বিষয়ে রাশিয়ান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তারা এই বার্তাও দিয়েছে যে দায়িত্বশীল দেশ কখনো এই ধরনের অপরাধীদের আশ্রয় দেয় না।
১৯৫৩ সালে ব্রাজিলে প্রতিষ্ঠিত হয় জেবিএস। বর্তমানে বিশ্বের ১৫টি দেশে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্বব্যাপী জেবিএসের দেড় শটিরও বেশি প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে দেড় লাখের বেশি মানুষ কাজ করেন। ম্যাকডোনাল্ডসের মতো ফাস্ট ফুড চেইনশপ এবং বড় বড় সুপার মার্কেটে মাংস সরবরাহ করে জেবিএস। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই গরুর মাংসের চাহিদার প্রায় এক-চতুর্থাংশের জোগান দেয় জেবিএস।
এর আগে গত ৬ মে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় জ্বালানি পাইপলাইনের ব্যবস্থাপনা নেটওয়ার্কে র্যানসমওয়্যার হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ১০০ গিগাবাইটের মতো জরুরি তথ্য ছিনিয়ে নেয় সাইবার হামলাকারীরা। পরে ৪৪ লাখ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে কলোনিয়াল পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ নেয় যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ।