আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। মহামারি শুরুর পর থেকে ভাইরাসটিতে মোট আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে থাকা দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ফের বৃদ্ধি পেয়েছে রোগটির সংক্রমণ। বুধবার (৪ আগস্ট) দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বিপর্যয়কর অবস্থায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র।
অপর দিকে এ দিন প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে ছিল দক্ষিণ এশিয়ায় করোনার উপকেন্দ্র (এপিসেন্টার) হিসেবে পরিচিতি পাওয়া দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া।
মঙ্গলবার থেকে বুধবার- শেষ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে।
সংকটময় পরিস্থিতি শুরুর পর থেকে বিশ্বে এ রোগে আক্রান্ত, মৃত্যু ও আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠাদের সংখ্যা বিষয়ক হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটার্স বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ছয় লাখ ৮০ হাজার ৬৬৯ জন। আর মারা গেছেন ১০ হাজার ৩০ জন। এছাড়া এদিন প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন চার লাখ ৩৮ হাজার ৯৫৬ জন রোগী।
যদিও এর আগের দিন মঙ্গলবার বিশ্বে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ছয় লাখ ১৯ হাজার ৪২ জন। যেখানে মৃতের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৭৫ জন। ওই দিন ভাইরাসটি থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা ছিল চার লাখ ৫৮ হাজার ২৭৬ জন।
অর্থাৎ শেষ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বজুড়ে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৬১ হাজার ৬২৭। তবে মৃতের সংখ্যা কমেছে ৪৫ এবং করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ১৯ হাজার ৩২০ জন।
- আরও পড়ুন : পরীমনির সহযোগী রাজও আটক, মাদক উদ্ধার
জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডো মিটার্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ১২ হাজার ২৭৯ জন এবং এ রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মারা গেছেন ৬৫৬ জন।
অপর দিকে ইন্দোনেশিয়ায় বুধবার করোনায় মারা গেছেন এক হাজার ৭৪৭ জন। যা ছিল ওই দিন দৈনিক মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু। পাশাপাশি বুধবার দেশটিতে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও ছিল ৩৫ হাজার ৮৬৭ জন।
এছাড়া এদিন বিশ্বের অন্যান্য যেসব দেশে করোনায় আক্রান্ত-মৃত্যুর উচ্চহার দেখা গেছে সে দেশসমূহ হলো- ব্রাজিল (নতুন আক্রান্ত ৪০ হাজার ৪৬০, মৃত্যু এক হাজার ১১৮), ভারত (নতুন আক্রান্ত ৪২ হাজার ৮১৭, আর মৃত্যু ৫৩২), ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান (নতুন আক্রান্ত ৩৯ হাজার ৩৫৭, মৃত্যু ৪০৯), যুক্তরাজ্য (নতুন আক্রান্ত ২৯ হাজার ৩১২, মৃত্যু ১১৯), ফ্রান্স (নতুন আক্রান্ত ২৮ হাজার ৩৮৪, মৃত্যু ৫৩), তুরস্ক (নতুন আক্রান্ত ২৬ হাজার ৮২২, মৃত্যু ১২২) এবং রাশিয়া (নতুন আক্রান্ত ২২ হাজার ৫৫৯, আর প্রাণ হারিয়েছেন ৭৯০ জন)।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সক্রিয় করোনা রোগীর আছেন এক কোটি ৫৭ লাখ ২০ হাজার ২৯৫ জন। এদের মধ্যে মৃদু উপসর্গ বহন করছেন এক কোটি ৫৬ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৪ জন। আর গুরুতর অসুস্থ আছেন ৯৩ হাজার হাজার ৪২১ জন।
ওয়ার্ল্ডো মিটার্সের তথ্য জানাচ্ছে, মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২০ কোটি নয় লাখ ৫৬ হাজার ৯৫২ জন এবং মারা গেছেন মোট ৪২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। আর প্রাণঘাতী এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ১৮ কোটি নয় লাখ ৬৭ হাজার ৫৫ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনা ভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল চীনে।
তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি। এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
যদিও তাতেও এই ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় অবশেষে সেই বছরের ১১ মার্চ করোনা ভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা দেয় ডব্লিউএইচও।
বিএসডি/এমএম