ধনী দেশগুলোর ঢালাও বুস্টার কর্মসূচির কারণে বিশ্বজুড়ে টিকা বণ্টনে অসাম্য বাড়ছে; এবং বাড়তে থাকা এই অসাম্য করোনা মহামারিকে আরও দীর্ঘায়িত করবে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ধনী দেশগুলোতে শুরু হওয়া বুস্টার বা করোনার তৃতীয় ডোজ দেওয়া বিষয়ক কর্মসূচির সমালোচনা করে বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে করোনার অধিক ঝুঁকিতে যারা আছেন, তাদের একটি বড় অংশই এখনও টিকা পাননি। অন্যদিকে ধনী দেশগুলোর অধিকাংশ নাগরিক যেখানে করোনার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছেন, তাদেরকে এখন দেওয়া হচ্ছে টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ।’
‘ধনী দেশগুলোর এই ঢালাও বুস্টার কর্মসূচি করোনা মহামরির সমাপ্তি টানার বদলে তাকে আরও দীর্ঘায়িত করবে। পাশাপাশি, এই ভাইরাসটির নিত্য নতুন ধরন আগমনের সুযোগ সৃষ্টি করবে।’
‘কারণ, যারা এখনও করোনা টিকার ডোজ পাননি, গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হার তাদের বেশি থাকবে। ফলে ভাইরাসটির অভিযোজনের প্রবণতাও থাকবে বেশি।’
করোনা টিকা বাজারে আসার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে করোনা টিকা বণ্টনে অসাম্যের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ডব্লিউএইচও। সংস্থার পক্ষ থেকে একাধিকবার বলা হয়েছে, বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি যেখানে করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন, সেখানে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল অনেক দেশ এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত ডোজের অভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরুই করতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, করোনার টিকা বাজারে এসেছে এক বছর আগে, অথচ এখনও আফ্রিকার প্রতি চারজন স্বাস্থ্যকর্মীর তিনজনই টিকা পাননি।’
‘যতদিন পর্যন্ত আমরা পুরো বিশ্বকে টিকার আওতায় না আনতে পারছি…ততদিন পর্যন্ত মহামারির সমাপ্তি টানা সম্ভব হবে বলে আমার মনে হয় না।’
সূত্র: আলজাজিরা
বিএসডি/ এলএল