নিজস্ব প্রতিবেদক:
গভীর নিম্নচাপটি ভারতীয় ভূখণ্ডে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি বেড়েছিল, তীব্র গরম থেকে স্বস্তি পেয়েছিল মানুষ। শনিবার থেকে আবার বৃষ্টি কমে গিয়ে তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এতে নতুন নতুন অঞ্চলে ফের তাপপ্রবাহ শুরু হতে পারে বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। স্থল গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্রবন্দরসহ দেশের উকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে শনিবার সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। নদীবন্দরগুলোতে বহাল আছে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সব বিভাগে কম-বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে মোংলায়। এ সময়ে ঢাকায় ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি প্রথমে ঘণীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর এটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গ-উত্তর উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে ভারতের ঝাড়খন্ড ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
শনিবার (২০ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস তুলে ধরে তিনি বলেন, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে
এ সময়ে দক্ষিণাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। দেশের অন্যত্র তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানান ওমর ফারুক।
সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী দুদিন পরে বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিকম ৫ ডিগ্রি সেলসিয়া ছিল সিলেটে। শনিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে, ২৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়াও উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়োহাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরসমূহকে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বিএসডি/ফয়সাল