আন্তজার্তিক ডেস্ক:
যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের বিধি লঙ্ঘনের মিথ্যা অভিযোগে এক তরুণীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করেছেন দেশটির পুলিশের একজন কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে ভুয়া ওয়ারেন্ট দেখিয়ে ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বুধবার লন্ডনের একটি আদালতে এই ধর্ষণ ও হত্যা মামলার শুনানির সময় আইনজীবীরা এসব তথ্য দিয়েছেন।
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত ব্রিটেনে গত মার্চে লকডাউন চলাকালীন সারাহ এভারার্ড নামের ওই তরুণীর হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা দেশটিতে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। সারাহর নিখোঁজের ঘটনায় ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়। একই সঙ্গে রাস্তায় নারীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
দক্ষিণ লন্ডনের ক্ল্যাফামে এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাওয়ার সময় সারাহকে করোনাবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ কর্মকর্তা ওয়েন। তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। আলামত ধ্বংস করতে ওই তরুণীর মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে দেহাবশেষ একটি জঙ্গলে ফেলেন দেন ওয়েন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আদালতে দায়েরকৃত মামলার শুনানিতে আইনজীবী টম লিটল বলেন, গত ৩ মার্চ মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ ৩৩ বছর বয়সী সারাহকে টার্গেট করেন ওয়েন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে করোনাভাইরাসের বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন তিনি।
লন্ডনের আদালতের এই আইনজীবী বলেন, ওই ঘটনার সময় দায়িত্বরত ছিলেন না ওয়েন। তিনি সারাহকে ‘ভুয়া গ্রেফতার’র মাধ্যমে অপহরণ করেন। তাকে হাতকড়া পরিয়ে ওয়োরেন্ট কার্ড দেখান তিনি।
পুলিশের নিরাপত্তা ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, সারাহকে গাড়িতে তুলে নেওয়ার আগে পুলিশ কর্মকর্তা ওয়েন ওয়ারেন্ট কার্ড দেখান এবং হাতকড়া পরান। পাশ দিয়ে গাড়িতে করে চলে যাওয়া এক দম্পতি এ ঘটনা দেখেন। তারা মনে করেছিলেন, আন্ডারকাভার কোনও পুলিশ কর্মকর্তা হয়তো কাউকে গ্রেফতার করছেন।
আইনজীবী বলেন, লকডাউন বিধিনিষেধ প্রয়োগকারী ওয়েন তার জ্ঞান এবং পুলিশ টহলের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছেন। কোন ধরনের ভাষা ব্যবহার করতে হবে তা তিনি জানতেন।
সারাহর সাবেক একজন প্রেমিক বলেছেন, সারাহ বুদ্ধিমান এবং তার রাস্তায় চলাচলের জ্ঞান ছিল। জোরাজুরি করে অথবা ভুল বুঝিয়ে কোনও অপরিচিত ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলতে পারতো না।
অপহরণ, ধর্ষণ এবং হত্যার এই মামলায় লন্ডন পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে আদালত রায় ঘোষণা করবেন।
সূত্র: এএফপি।
বিএসডি/আইপি