আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে খুলছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চলমান মহামারির কারণে স্কুল খোলার পরে করোনা-বিধি মেনেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হবে। কিন্তু স্কুলে এসে কোনো শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে তার দায়ভার নেবে না স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মানছে কি না, তা দেখার দায়িত্বও অভিভাবকদের ওপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৬ নভেম্বর স্কুল খোলার আগে অভিভাবকদের এমনটাই জানিয়েছে শহরের বেশিরভাগ স্কুল। এমনকি কিছু স্কুল নোটিশ দিয়েও অভিভাবকদের সতর্ক করে দিয়েছে।
আর এই বিষয়টি নিয়েই এবার শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই নোটিশ দিয়ে স্কুল নিজেদের দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকদের একাংশ। কারণ তাদের মতে, স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীরা কী করছে, সে দিকে নজর দেওয়া অভিভাবকদের পক্ষে সম্ভব নয়।
তাই কোনো শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হলে স্কুল তার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। আবার স্কুল কর্তৃপক্ষের পাল্টা প্রশ্ন, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের দায়ভারের পুরো দায়িত্বটা কেন তাদের ওপরে পড়বে?
কলকাতার গার্ডেন হাইস্কুলের অভিভাবকদের একাংশ জানান, তারা স্বেচ্ছায় ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন এবং তারা অসুস্থ হলে স্কুলের কোনো দায় নেই— এই শর্তে পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠাতে বলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ওই অভিভাবকদের প্রশ্ন, স্কুলে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা কাটানোর সময়ে বা তার পরে বাড়ি ফিরে কোনো পড়ুয়া অসুস্থ হলে তার দায় কী করে অস্বীকার করতে পারেন স্কুল কর্তৃপক্ষ? এই নিয়ে ওই স্কুলের অধ্যক্ষা রাজশ্রী বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, তাদের স্কুলে যাবতীয় করোনা-বিধি মেনে ক্লাস চলবে। এমনকি, স্কুলে কোনো শিক্ষার্থীর জ্বর এলে থাকছে আইসোলেশন রুমও। স্কুলে মাস্ক পরা, জীবাণুমুক্ত করা সংক্রান্ত সব বিধিই মেনে চলা হবে।
তবু স্কুলে বা স্কুলের বাইরে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্কুলের কি কোনো দায় নেই? জবাবে ব্রততী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তো শুধু স্কুলে থাকছে না। তারা গাড়ি করে স্কুলে আসছে। স্কুল ছাড়াও বাইরে বেরোচ্ছে। তাই কোনো শিক্ষার্থীর করোনা হলে তার দায় কেন স্কুল নেবে? অভিভাবকদের জানিয়েছি, এটি একটি টিম ওয়ার্ক। স্কুল যেমন দেখবে শিক্ষার্থী কোভিড-বিধি মানছে কি না, তেমনই স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে তারা স্বাস্থ্য-বিধি মানছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব অভিভাবকদেরও।’
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি জানান, স্কুল খুললে একটি ফর্মে শিক্ষার্থীদের নিশ্চয়তা দিতে হবে, তার বা তার পরিবারের কারও জ্বর হলে সে স্কুলে আসবে না।
তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে স্কুল খোলার কিছু দিন পরে এক শিক্ষার্থীর জ্বর এসেছিল। বাড়ি ফেরার পরে জানা যায়, তার করোনা হয়েছে। তখন তার সংস্পর্শে যারা যারা এসেছিল, তাদের কয়েক দিন স্কুলে আসতে বারণ করেছিলাম। স্কুল তো সতর্ক থাকবেই, পাশাপাশি সাবধান হতে হবে অভিভাবকদেরও।’