মিরপুর প্রতিনিধি :
ইউরোপ-অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানবপাচার হতো ভারতে। তারপর সেখানকার কলকাতা ও দিল্লির টর্চার সেলে চলত অকথ্য নির্যাতন। সেই নির্যাতনের ভিডিও ভিকটিমদের আত্মীয়দের কাছে পাঠিয়ে আদায় করা হতো লাখ লাখ টাকা। এমন সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা। পরে থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে গ্রেফতার মানবপাচার চক্রের সহযোগী বুলবুল আহমেদ মল্লিক রাজধানীর পল্লবী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে দলীয় সূত্রে।
বিএনপির এই নেতার বিরুদ্ধে জায়গা-জমি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয়রা জানান, মিরপুর ১১ নম্বরের পলাশ নগরে বিএনপি নেতা বুলবুল মল্লিকের ৪০-৫০ জনের একটি ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে এই বিএনপি নেতা বহু মানুষের জমি দখল করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের কাছে বিক্রি করতেন। সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলতে তিনি গুলশান-বনানীসহ অভিজাত এলাকায় অফিস ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চালাতেন।
জানা গেছে, ২০০০ সালে ডিএনসিসির নির্বাচনে ৫নং ওয়ার্ডের বিএনপির বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন বুলবুল আহমেদ মল্লিক। ওই নির্বাচনে তিনি বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেন।
ডিএনসিসির বিএনপিসমর্থিত এক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, এখন বুলবুল মল্লিক একটা বড় বিপদে পড়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে কিছু বলব না। মানবিক কারণে তাকে ছাড় দিলাম। কিন্তু এলাকার সবাই জানে আমি ওর কাছে কিছু টাকা দিয়েছি পলাশ নগরে জায়গা কেনার ব্যাপারে। জায়গা না দিয়ে জাল দলিলের মাধ্যমে আমাকে ধোঁকা দিয়েছে বুলবুল। টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় ওর পেছনে অনেক ঘুরেছি। আল্লাহ ওর বিচার করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পল্লবী থানা বিএনপির সভাপতি ও ডিএনসিসির ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, বুলবুলকে দুই দিন আগে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে পল্লবী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। সে বিদেশে লোক পাঠায় সেটা জানতাম, তবে পাচারকারী কিনা- তা জানা নেই। আর জায়গা-জমি দখল ও জাল-জলিয়াতির ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি। তাই এ ব্যাপারে কিছু বলা সমীচীন হবে না। আমরা আইনগতভাবে সবকিছু মোকাবিলা করব।
রূপনগর থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) মোকাম্মেল বলেন, মানবপাচারের অভিযোগে আটক ৩ জনের বিরুদ্ধে রূপনগর থানায় একটি মামলা হয়েছে।