ভারতে করোনাভাইরাসে একদিনে রেকর্ড মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
এনডিটিভির খবরে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমিত হয়েছে ৩ লাখ ৪৬ হাজার জন। গত ২৪ ঘণ্টার তুলনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু দুইই বেড়েছে।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ২ হাজার ২৬৩ জন করোনায় মারা যান। সংক্রমিত হন ৩ লাখ ৩২ হাজার ৭৩০ জন।
এদিকে এনডিটিভির খবরে জানা যায়, দিল্লিতেও করোনাভাইরাসে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সেখানে স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার ৩৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমিত হয়েছেন ২৪ হাজার ৩৩১ জন। দিল্লিতে করোনা শনাক্তের হার ৩২ শতাংশ।
দিল্লিতে এ পর্যন্ত ৯২ হাজার মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। সংক্রমণের দিক দিয়ে এটিও নতুন রেকর্ড।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিল্লিতে ৩০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন ও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের সংকট রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসপাতালে শয্যা, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধের সংকটের কথা জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন বিভিন্ন পরিবার।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেছেন, দিল্লিতে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকলে কি এখানকার মানুষ অক্সিজেন পাবেন না? তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানতে চান দিল্লিতে কবে অক্সিজেন সরবরাহের বন্দোবস্ত হবে।
বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে ভারত। ভারতের পর রয়েছে ব্রাজিল। সংক্রমণের দিক দিয়ে সম্প্রতি ব্রাজিলকে টপকে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে ভারত।
ভারতে গত দুই দিন ধরে দৈনিক তিন লাখের ওপরে নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। তার আগে ১৫ এপ্রিল থেকে ভারতে প্রতিদিন দুই লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছিল।
ভারতে করোনার সংক্রমণ মহারাষ্ট্র, কেরালা, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশে বেশি। উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা ও রাজধানী নয়াদিল্লির সংক্রমণ পরিস্থিতিও অবনতিশীল।
করোনা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির মুখে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে রাত্রিকালীন কারফিউসহ বিভিন্ন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে আরম্ভ হয়। দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখন পিক বা চূড়ায় উপনীত হয়নি। ফলে দেশটিতে করোনার সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনার এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা কবে নাগাদ নিম্নমুখী হতে পারে, সে সম্পর্কে দেশটির বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।