নিজস্ব প্রতিবেদক, ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে ফের বিলুপ্তপ্রায় একটি নীলগাই উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার(৭ জানুয়ারি) বিকেলে ভারত থেকে পালিয়ে আসা নীলগাইটি উদ্ধার করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের লোকজন। তারা চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে নীলগাইটি ধরতে সক্ষম হন। পরে মাধবপুর থেকে ধুসর ছাই রংয়ের নীলগাইটি উদ্ধার করে বিজিবি সদস্যরা।
এনিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে গত চার বছরে পাঁচটি নীলগাই উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও এর আগে উদ্ধার হওয়া সবগুলো নীলগাই মারা গেছে। তবে এবারের উদ্ধার হওয়া নীলগাইটি সুস্থ আছে এবং বিজিবির জিম্মায় আছে বলে জানিয়েছেন বৈরচুনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিমু সরকার।
ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ফয়সাল আমিন হৃদয় বলে, “আমরা ১০ থেকে ১২ জন্য মাঠে খেলে বাড়ি ফিরছিলাম। এসময় দেখি নীলগাইটি মাঠে হাঁটছে। পরে আমরা জোরে ‘নীলগাই’, ‘নীলগাই’ বলে হই-হুল্লোড় করলে গ্রামবাসী চারদিক থেকে ঘেরাও করে এটিকে ধরে ফেলে।”
স্থানীয় তমিজ মিয়া বলেন, ‘অনেক চেষ্টার পর আমরা নীলগাইটি ধরতে সক্ষম হই। এটি অনেক শক্তিশালী, সামলানো যাচ্ছিল না। তাই দড়ি দিয়ে বেঁধে চেয়ারম্যানকে মোবাইলে খবর দিই।’
বটচুনা ইউপি চেয়ারম্যান হিমু সরকার জানান, বিকেলের দিকে নীলগাইটি ভারতীয় সীমান্ত (শিঙ্গোর) অতিক্রম করে মাধবপুর গ্রামে ঢুকে পড়ে। গ্রামবাসী নীলগাইটি দেখতে পেয়ে চারপাশে ঘেরাও করে রাখে। পরে আমাকে খবর দিলে বিজিবি ক্যাম্পে খবর দেই।
পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, উপজেলা প্রাণী চিকিৎসক নীলগাইটি দেখেছেন। এটি সুস্থ রয়েছে। নীলগাইটিকে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে। প্রাণীটির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, নীলগাই উদ্ধারের খবরটি আমরা এখনও জানি না। খবরটি সঠিক হলে এটি হবে চলতি বছরের প্রথম উদ্ধার করা নীলগাই। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত পাঁচটি নীলগাই উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে সবকটি মারা গেছে।
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাজেদ জাহাঙ্গীর বলেন দিনাজপুর, নওগাঁ, জয়পুরহাট এলাকায় নীলগাইয়ের বিচরণের ইতিহাস পাওয়া গেলেও ১৯৪০ এর পর থেকে বাংলাদেশে প্রাণীটি খুব একটা দেখা যায়নি। চেহারায় ঘোড়ার সাথে কিছুটা সাদৃশ্য থাকা এ প্রাণীটির অস্তিত্ব ভারতের অনেক এলাকায় থাকলেও বাংলাদেশে এখন বিলুপ্ত। এছাড়া পাকিস্তান ও নেপালেও এর দেখা মেলে। নীলগাই উদ্ধার হলে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। প্রজননের মাধ্যমে ফের বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীটিকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
এবিষয়ে শিঙ্গোর সীমান্ত বিজিবির নায়েক সুবেদার সাইফুদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিএসডি/এসএ