নিজস্ব প্রতিবেদক
ঠাকুরগাঁওয়ে মসজিদে দানবাক্স থেকে টাকা চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর ও অর্ধেক মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২১ মে) রাতে সদর উপজেলা রাজাগাঁও ইউনিয়নের উত্তর বটিনা আল-আকসা জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
আটক দুই শিক্ষার্থী হলো, দেবীপুর ইউনিয়নের কিসমত কেশুরবাড়ি এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে ফয়সাল (১৩) ও বাবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে সজীব (১২)। তারা দুইজনেই স্থানীয় এক স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার মাগরিবের নামাজের পর থেকেই দুই শিশু মসজিদের আশপাশে ঘোরাঘুরি করছিল। পরে এশার নামাজের সময় আবারও তাদের মসজিদ এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এসময় নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা জিজ্ঞাসা করলে তারা নামাজ পড়তে আসছে বলে জানায়। পরে তাদের হাতে থাকা একটি ব্যাগে কিছু টাকা ও যন্ত্রপাতি দেখে মুসুল্লিদের সন্দেহ হয়।
পরে মসজিদের দানবাক্সে গিয়ে দেখেন বাক্সের তালা ভাঙা এবং বাক্স খালি। এসময় এই দুই শিশুকে আটক করেন তারা। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে টাকা, প্লাস, টেস্টার ও ওয়াল কাটার মেশিন পাওয়া যায় বলে স্থানীয়রা জানায়।
পরে শাস্তি হিসেবে আকট দুই শিশুর হাত গ্রিলে সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর ও মাথার অর্ধেক চুল কেটে দেওয়া হয়। এরপর তাদের পরিবারকে খবর দিলে পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে দুই শিশুকে নিয়ে যায়।
রাজাগাঁও ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কেউ চুরি করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করে থানায় ধরিয়ে দেন। তারা শিশু তাদের বয়সও বা কত। তাদের তো এভাবে মাথার চুল কেটে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করে ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে রুহিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম নাজমুল কাদের বলেন, এ ব্যাপারে এখনও অভিযোগ পাইনি। কেউ চুরি করলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে, কেউ চুল কেটে দিতে পারে না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, চুরির অভিযোগে দুই শিশুর পা বেঁধে নির্যাতন ও চুল কর্তনের বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। তবে কেউ অপরাধ করলে তার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু কেউ চুল কেটে দিতে পারে না। যারা এ কাজ করেছে তারাও অপরাধী।