চিকিৎক-ইঞ্জিনিয়ার-ব্যাংকারসহ ৮ সন্তানের মা শতবর্ষী মরিয়ম বেগমকে সন্তানরা গাড়ি থেকে ফেলে দিলেন একটি বাজারের পাশে
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকার ধামরাই উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের রশ্মিমপুর গ্রামের চিকিৎক-ইঞ্জিনিয়ার-ব্যাংকারসহ ৮ সন্তানের মা শতবর্ষী মরিয়ম বেগমকে সন্তানরা গাড়ি থেকে ফেলে দিলেন একটি বাজারের পাশে। এলাকাবাসী বৃদ্ধাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। ডাক্তার, ব্যাংকার, ইঞ্জিনিয়ার ও ব্যবসায়ীসহ ওই মায়ের আট ছেলে ও মেয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত। তারপরও কোনো ছেলের বাড়িতে তার মাথা গুঁজবার ঠাঁই হলো না। তার বাবার দেওয়া ১৫ বিঘা জমি সন্তানদের লিখে না দেওয়ায় এ পরিণতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে গ্রামবাসী।
সরেজমিন জানা যায়, ওই গ্রামের প্রয়াত আসুরুদ্দিন সরকার নামে ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন। তাঁতশিল্পসহ কয়েকশ বিঘা জমি ছিল আসুরুদ্দিন সরকারের। তাই একমাত্র মেয়ে মরিয়মের সুখের কথা ভেবে তাকে ১৫ বিঘা জমি লিখে দিয়ে বিলাসবহুল একটি বাড়ি নির্মাণ করে দিয়ে বিয়ে দেন। এরপর জামাতা আব্দুস সালামকে ঘরজামাই হিসেবে বাড়িতে রাখেন।
পরবর্তীতে মরিয়ম ছয় ছেলে ও দুই মেয়ের জননী হন। প্রত্যেক সন্তানকেই লেখাপড়া শিখিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেন। বড় ছেলে মো. আক্তারুজ্জামান একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা। ছোট ছেলে হুমায়ুন কবীর বিসিএস কর্মকর্তা (ডাক্তার)। তিনি একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত। সাখাওয়াত হোসেন সাকী ও আব্দুল্লাহেল বাকি নামকরা ব্যবসায়ী ও আলমগীর হোসেন বিদেশে ভালো বেতনে চাকরি করেন।
তাদের কারো সংসারে কোনো অভাব নেই। শুধু মাকে ভরণপোষণ করতে যেন তাদের অভাবের শেষ নেই। ক্ষুধার জ্বালায় সদা ছটফট করেন এ বৃদ্ধা। ক্ষুধার যন্ত্রণা মেটাতে ঘুরে বেড়ান এদিক-সেদিক। না খেয়ে তার বাকশক্তি হারিয়ে ফেলার উপক্রম হয়ে গেছে।
সন্তানদের কাছে বিষয়টি বারবার বলায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে শতবর্ষী মাকে চিকিৎসার কথা বলে গাড়িতে তুলে স্থানীয় বঙ্গবাজারের পাশে রাস্তায় ফেলে যান। তার গোঙানির শব্দ পেয়ে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় আব্দুল লতিফের বাড়িতে নিয়ে সেবা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
বৃদ্ধার ছেলে আলমগীর হোসেন বলেন, আমার মায়ের অনেক বয়স হয়েছে। তার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমাদের নিয়ে এমন মিথ্যাচার করছেন। আমরা তাকে যথেষ্ট ভরণপোষণ দিচ্ছি ও সেবাযত্ন করছি।
বিএসডি/আইপি