কৃষি ডেস্ক,
পেঁপে চাষ করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন মাগুরার কৃষকরা। এ কারণে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা ।
সরেজমিন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বারাইপাড়া গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম সাথে কথা বলে জানা গেছে, পেঁপে চাষ করে লাভবান হয়েছেন তিনি। ৩ বিঘা জমিতে লাগানো পেঁপে ক্ষেত থেকে এ বছর প্রায় ২ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা মণ দরে পেঁপে বিক্রি করছেন। বিভিন্ন এলাকার ব্যাপারীরা সরাসরি ক্ষেত থেকে পেঁপে নিয়ে যায়। এর পাশপাশি স্থানীয় বাজারসহ পাইকারি আড়তে পেঁেপ বিক্রি করছেন তিনি। দুই বছর আগে কৃষি বিভাগের সহায়তায় ২ বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ শুরু করেন। এতে লাভবান হওয়ায় আরো ১ বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করেছেন।
অমিরুল জানান, পেঁপে চাষের সুবিধা হচ্ছে জমিতে একবার চারা লাগালে ৩ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। প্রথম বার পেঁপের চারা লাগানোসহ বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যায় প্রতি বিঘায় তার খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। পরবর্তি দ্ইু বছর গাছের পরিচর্যায় খরচ খুবই কম লাগে। ফলে ঝড় বৃষ্টিতে গাছের ক্ষতি না হলে খরচের তুলনায় লাভ বেশি হয়।
বারইপাড়া গ্রামের অপর কৃষক রুহুল আমিন জানান, পেঁপে একটি লাভজনক ফসল। চলতি মৌসুমে তিনি ৪৬ শতক জমিতে পেঁপের চাষ করেছেন। ক্ষেত থেকে তিনি পেঁপে বিক্রি শুরু করেছেন। এ বছর প্রায় দেড় লাখ টাকার পেঁপে বিক্রির আশা করছেন। ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষেতের ক্ষতি না হলে আগামীতে আরো বেশি লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার চার উপজেলায় মোট ৬৭৬ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪৪০ হেক্টর, শ্রীপুরে ১৮৫ হেক্টর, শালিখায় ১৮ হেক্টর এবং মহম্মদপুর উপজেলায় ৩৩ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। যা থেকে ১৩ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন পেঁপে উৎপাদিত হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। চলতি মৌসুমে স্থানীয় জাতের পাশাপাশি উচ্চফলনশীল শাহী, রেডলেডিসহ বিভিন্ন জাতের পেঁপের চাষ হয়েছে। কৃষকরা যাতে পেঁপের ভালো ফলন পেতে পারে এর জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক বলেন,পেঁপে ভিটামিন-এসহ বিভিন্ন পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ একটি ফসল। পেঁপের ভালো ফলন পাওয়ার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পেঁপে চাষের সুবিধা হচ্ছে জমিতে একবার চারা লাগালে ৩ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে প্রথম বছরের পর পরবর্তি দুই বছর ক্ষেত পরিচর্যার খরচ খুবই কম লাগে। এতে কৃষকরা ব্যাপকভাবে লাভবান হয়। আবহওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও কৃষকরা পেঁপে চাষে ব্যাপকভাবে লাভবান হবে।
বিএসডি/এএ