নিজস্ব প্রতিবেদক:
নীলফামারী জেলায় শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা মাঝারি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন আলুচাষি, ইরি বেরো রোপণকারী ও দিনমজুররা। বৃষ্টিপাতের ফলে নীলফামারী ও কিশোরগঞ্জের বেশ কিছু এলাকায় আলুর ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায়, পঁচে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের কৃষক হাফিজুর রশিদ বলেন, এবার ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। রাত থেকে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে সব আলু পঁচে যেতে পারে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, বৃষ্টিতে ফসলের কিছুটা ক্ষতি হবে। বিশেষ করে আলু ক্ষেতগুলোতে দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকলে পঁচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই সমস্যা উত্তোরণে কৃষি বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বৃষ্টিতে হাড় কাঁপানো শীত জেঁকে বসেছে। বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে কৃষককুল ফসলি মাঠে নামতে না পারায় ইরি বোরো রোপণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টির কারণে নীলফামারীতে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমেছে। তবে নিম্নআয়ের মানুষ কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভাড়া না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অটোরিকশা-ভ্যানচালকরা।
অটোরিকশা চালক সুভাষ বলেন, সকাল থেকে রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। মানুষজনের চলাচল নেই। অন্যদিন সকালে ১০০ টাকার মতো আয় হলেও আজ যাত্রীদের দেখা নেই।
শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে দিন-মজুরের হাটে বসে থাকা রাব্বী বলেন, সকাল থেকে বসে আছি। মনে হয় কপালে কাজ জুটবে না। বাড়িতে ফিরে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
দমকা বাতাসের কারণে বেলা ১১টা থেকে নীলফামারী জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় নেসকো জানান, ঝড়ো বাতাসের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের তারে ত্রুটি দেখা দিয়েছে; যা সারিয়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পযর্ন্ত ১ মিলিমিটার এবং শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পযর্ন্ত ১১ দশমিক ২ মিলিমিটার রেকর্ড করেছে।
খনার বচন আছে- ‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্য রাজার পুণ্যদেশ’। খনা মাঘের শেষের বৃষ্টিকে আশীর্বাদপূর্ণ আখ্যা দিয়েছিল তার সময়ের কৃষি-পঞ্জিকামতে। ফলে মাঘের শেষে বৃষ্টি হলে জমি নরম ও সরস হয়, চাষাবাদে ইতিবাচক ফল বয়ে আনে। তবে দমকা বাতাস ও বৃষ্টি জনজীবনকে আরও বেশি কাহিল করে তুলেছে।
বিএসডি/ এলএল