নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিষিদ্ধ মাদক ‘মারিজুয়ানা’ কাণ্ডে জাকার্তা থেকে প্রত্যাহার হওয়া বাংলাদেশি কূটনীতিক কাজী আনারকলির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে সরকারি তদন্ত কমিটি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের কাছে রিপোর্ট জমা দেন তদন্ত কমিটির প্রধান মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস।
মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগ সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর কাজী আনারকলিকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। আগেই তার ছুটি বাতিল হয়েছিল। তদন্ত কমিটির সুপারিশ এবং পররাষ্ট্র সচিবের নির্দেশনা মতে মন্ত্রণালয়ের লিগ্যাল উইং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছে।
কাজী আনারকলি ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ওই দেশটির মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ তার বাসায় মাদক পাওয়ার পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা তাকে ‘ডিটেনশন সেন্টারে’ আটক রাখা হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছে তার বাসায় নাইজেরিয়ার এক ব্যক্তি থাকতেন। তিনিও মাদকাসক্ত।
এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজী আনারকলিকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় ফিরিয়ে আনে ও প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। ওই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, আনারকলির বাসায় ইন্দোনেশিয়ান মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অভিযানের বিস্তারিত ঢাকাকে জানিয়েছে জাকার্তা। ইন্দোনেশিয়ার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ জাকার্তার বিশাল ওই অ্যাপার্টমেন্ট টাওয়ারে আরও অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করলেও সেদিন কেবল বাংলাদেশি কূটনীতিক আনারকলির বাসাতে অপারেশন চালানো হয়। বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রদূত কাজী আনারকলির কাছ থেকেই মাদক উদ্ধার হয়েছে, তার বয়ফ্রেন্ডের কাছ থেকে নয়। ডোপ টেস্টে তথা আনারকলির ইউরিন টেস্টে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনি প্রায়শই মারিজুয়ানা সেবন করেন।
আরও জানানো হয়েছে, মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অভিযানের ঠিক আগে আগেই তিনি নিষিদ্ধ মাদক মারিজুয়ানা গ্রহণ করেছেন বলে সেই টেস্টে প্রমাণ মিলেছে।
কূটনীতিক আনারকলি পররাষ্ট্র ক্যাডারের ২০ ব্যাচের কর্মকর্তা। নাইজেরিয়ান বন্ধু ব্যবসায়ী উইলিয়াম ইরোমেসিলি বেনেডিক্ট ওসিগবেমকে নিয়ে তিনি জাকার্তায় বসবাস করতেন।
কূটনৈতিক দায়িত্ব থেকে আনারকলিকে ফেরত আনার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে গৃহকর্মী নিখোঁজের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যানজেলেস থেকেও তাকে ফেরত আনা হয়েছিল। মার্কিন সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই তাকে ফিরিয়ে এনেছিলো সরকার।