আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন,মানুষ এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নতুন এক বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ছে। শেখ হাসিনা সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই দেশে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বুধবার ৮টায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকে স্মরণ করে নানক বলেন, শেখ হাসিনাকে বারবার মৃত্যুর মুখে পতিত হতে হয়েছে। তিনি একজন মৃত্যুঞ্জয়ী প্রধানমন্ত্রী। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাদের আশা ভরসাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে। সেদিন আমার মনে হয়েছিল- প্যান্ডেলের ৪ কোণে ৪ জন ফেরেশতা দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিলেন।
তিনি বলেন, ৫০ বছরে বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল, ঢাকা থেকে সিলেট ৪ লেন রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরও হয়েছে। বছরের প্রথম দিন বই ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে। ঝড়ে পড়া কমে গেছে। নতুন বই দিয়ে বছরের প্রথম দিন শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশ এখন উন্নয়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে দেশকে একটি সত্যিকারের স্বাধীন সার্বভৌমত্ব, গৌরবের ও উন্নয়নের দেশ হিসেবে পরিচয় করে দিয়েছেন। দেশের প্রতিটি ক্ষেতে উন্নয়ন হচ্ছে। মানুষ উন্নয়ন স্বচক্ষে দেখছে। আকাশপথ, স্থলপথ, জলপথ সব দিক দিয়ে দেশ উন্নত হচ্ছে। দেশের বেকার সমস্যা দূরীকরণে ইকোনোমিক জোন হয়েছে, কাজের জায়গা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদেশী বিনিয়োগকারী দেশে বিনিয়োগ করছেন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সারা বিশ্ব এখন বাংলাদেশের উন্নয়ন অবাক দৃশ্যে দেখছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেছে। মানুষ এখন এক উন্নয়নশীল বাংলাদেশ দেখছে।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আহমদের পরিচালনায় এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সিলেট- ৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, ড. আহমদ আল কবির, শাহ মো. মোশাইদ আলী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবির উদ্দিন আহমদ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রঞ্জিত সরকার, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজমল আলী, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফারুক আহমদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোবাশ্বীর আলী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছালেহ আহমদ হীরা, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বুরহান উদ্দিন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. সাকির আহমদ শাহিন, উপ প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, সদস্য নিজাম উদ্দিন, শহিদুর রহমান শাহিন, অ্যাডভোকেট বদরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ভিপি, সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম আহমদ, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু, তাঁতী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলামসহ নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশ বরেণ্য শিল্পী মমতাজসহ স্থানীয় শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিপ্লব বড়ুয়া তিনি বলেন, দেশ বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে। কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে শেখ হাসিনাকে পরাজিত করার সাধ্য কারও নেই।
বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমেরিকা কখনো আমাদের পক্ষে ছিল না। ৭৪ সালে খাদ্যভর্তি জাহাজ আটকে দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু সরকারের বদনাম করার জন্য। স্বাধীনতা যুদ্ধকালে তারা পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছিল, এখনও করছে। তাই শেখ হাসিনা সরকারের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সার্টিফিকেটের কোনো প্রয়োজন নেই।
১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব শহীদদের স্মরণ করে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ১৫ আগস্টের কাল রাতের স্মৃতি আরও আমাদের তাড়া দেয়। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দেশ ২৫ বছরে অনেক উন্নত হতো। সেদিন একজন রাজনৈতিক নেতার পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, সেদিন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। খুনিরা এতোই নির্মম ছিল যে ইসলাম ধর্ম অনুসারে দাফন কাফন করা হয়নি।
তিনি বলেন, তখন বিএনপি বলেছিল, বঙ্গবন্ধু নেতা ছিলেন ঠিকই, কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ ছিলেন। এটা বিএনপির ভুল ধারণা। ৭২ সালে ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিল বঙ্গবন্ধু সরকার। ৯৪ ডলার ছিল আমাদের মাথাপিছু আয়। ১৯৭৪ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ২৭৮ ডলারে গিয়ে পৌঁছেছিল। চীনেও তখন মাথাপিছু আয় ছিল ১৭৫ ডলার। ভারত ও পাকিস্তানও ছিল মাথাপিছু আয় ছিল কম।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েছকে স্মরণ করে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, তারা ছিলেন সিলেটের মধ্যমণি। আমি তাদের শান্তি কামনা। পরিশেষে তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
বিএসডি/এসএফ