স্টাফ রিপোর্টার,
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্বদানের সুযোগে অন্যদের ধোকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার মফিজুল ইসলাম মজনু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
এ কারণে কর্মকর্তাদের পরিবহনের সকল গাড়ি না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সকল ড্রাইভার। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে যৌক্তিক আন্দোলনে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা পরামর্শের জন্য অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মজনুর কাছে গিয়ে থাকে। তৃতীয় শ্রেণীতে এডহক ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীদের আন্দোলন, মাস্টাররোলে কর্মরত চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলন, ড্রাইভারদের বেতন স্কেল বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন আন্দোলনের সুযোগে শুধুমাত্র কর্মকর্তাদের সুযোগ সুবিধা আদায় করে অন্যদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ মজনু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
চলতি বছরের আগস্ট মাসে অফিসার্স এসোসিয়েশনের চলতি কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। মূলত আগামী নির্বাচনে নিজেকে সভাপতি পদে নির্বাচিত করার উদ্দেশ্যেই মজনু এমন করছেন বলে অনেকের অভিযোগ।
কর্মচারীদের আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগের বাহানা করে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে পরবর্তীতে কোন সহযোগিতা না করে কর্মকর্তাদের স্বার্থ হাসিলের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। মজনু ও তার সহযোগীদের এ ধরনের কর্মকান্ডে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পরস্পর মুখোমুখি হয়ে গেছে বলে অনেকেই মনে করেন।
ড্রাইভার ও অন্যান্য টেকনিক্যাল পদের বেতন স্কেল বৃদ্ধির জন্য তারা বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার পরিচালক (হিসাব) মোঃ তোফাজ্জল হক, মজনু ও তার সহযোগী অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক সাদৎ-আল-হারুন, হিসাব অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, সত্য সাহা ও মোহাম্মদ আবুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তারা এ ব্যপারে সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করে। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের আগের দিন ২৯ জুন তাদের সাথে পুনরায় যোগাযোগ করলে একই রকম আশ্বাস প্রদান করলেও এ ব্যপারে তারা কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা সকলে একই পরিবারের সদস্য। পরিবারের সকলেই সুবিধা পাবে এমন প্রত্যাশা সকলের। নির্বাচনে জয়ী হবার জন্য শুধুমাত্র একপক্ষ সুবিধা নিবে অন্যরা পাবে না তা বেমানান। এটা খুবই মারাত্মক ব্যাপার যে বিশেষ একজন ব্যক্তির জন্য একই পরিবারের সদস্য পরস্পর মুখোমুখি।
এ বিষয়ে এডহক ভিত্তিতে কর্মরত ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী এস.এম. মাহফুজুর রহমান মাসুদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ তৃতীয় শ্রেণীতে এডহক ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ীকরণের জন্য আন্দোলন করি। ৬ জুন রাতে আমরা মজনু স্যারের আশ্বাসে সারাদিন বসে থাকি পরে রাতে খোজ নিয়ে জানতে পারি আমাদের কোন কাজই হয়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী সমিতির সাধারন সম্পাদক মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, তৃতীয় শ্রেণীতে এডহক ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ীকরণের আন্দোলনের সুযোগে কর্মকর্তাদের বেতন স্কেল বৃদ্ধির জন্য অর্থ কমিটির সভায় উপস্থাপনের জন্য রেজিস্ট্রার ও ভাইস-চ্যান্সেলরের স্বাক্ষর ও সভার তারিখ নির্ধারণ করে নেয়। পরবর্তীতে রিজেন্ট বোর্ডে তা উপস্থাপিত হয় কিন্তু আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারি কর্মকর্তা ছাড়া আর কারও বেতন স্কেল বৃদ্ধির দাবী উপস্থাপন করা হয়নি।
এ বিষয়ে অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার মফিজুল ইসলাম মজনু বলেন, এডহক ভিত্তিতে কর্মরত ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ীকরণের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ভাইস-চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর, স্থানীয় এম.পি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও অন্যান্যদের অংশগ্রহণে সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভার রেজুলেশন রিজেন্ট বোর্ড থেকে পাশ করানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ড্রাইভারদের বেতন স্কেল বৃদ্ধির ব্যাপারে আমাকে কিছু জানায়নি, আমি আশ্বস্তও করিনি, পরিবহন ধর্মঘটের ব্যাপারেও আমি কিছু জানিনা।
বিএসডি/এস/এমএম/এমকেএ