মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) পরিবহনগুলোতে জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম সংযুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অগ্নিবীণা, বনলতা, রাখালী, রক্ত কবরী, সোনার তরী, রূপসী বাংলা, সংশপ্তক এই ৭টি বাসে জিপিএস ট্র্যাকার লাগানো হয়েছে।
ট্র্যাকিং সিস্টেম সংযুক্ত করায় বাসের অবস্থান জানা থেকে শুরু করে, বাস চলাচলের গতিবিধি (স্পিডোমিটার) ও রোডম্যাপ, গাড়ির ইঞ্জিন (চালু বা বন্ধের) এলার্টসহ বিভিন্ন সুবিধা দিবে জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেমটি। পরিবহনের বিভিন্ন রংই পরিবহন সম্পর্কে ধারণা দিবে৷ যেমন: পরিবহন অফ থাকলে পরিবহন লাল দেখাবে, চলমান থাকলে পরিবহনের রং সবুজ হবে, হলুদ থাকলে বুঝতে হবে জ্যামের মধ্যে আছে। তাছাড়া কয়টি পরিবহন মুভিং বা চলমান আছে, কয়টি আইডল বা অলসভাবে জ্যামে আছে, কয়টি গাড়ি বন্ধ হয়ে আছে সেটাও দেখা যাবে। জিপিএস ট্র্যাকারের সুবিধা পেতে মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে নির্দিষ্ট আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে সরাসরি তাদের বহনকৃত চলমান বাসগুলোর গতিবিধি ও রোডম্যাপ দেখতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিস থেকে জানা যায়, জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করার পর পরিবহন পরিচালক নিজে ট্র্যাকারের কার্যকারিতা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন। কোনো ত্রুটি না থাকায় দ্রুত শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে এই জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেমের আইডি ও পাসওয়ার্ড শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে। জিপিএস ট্র্যাকার পরিবহনগুলোতে সংযুক্ত করার ফলে শিক্ষার্থীরা হাতের মুঠোয় মোবাইল বা ল্যাপটপ ডিভাইসের নির্দিষ্ট অ্যাপসের মাধ্যমেই গাড়ির গতিবিধি ও রোডম্যাপ দেখতে পারবেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তর থেকে শুরু করে বাইরেও নির্দিষ্ট স্টপেজ সিস্টেমও চালু করা সম্ভব হবে। কার্যত শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে নির্দিষ্ট স্টপেজ থেকে বাসে উঠানামা করতে পারবেন। যেহেতু ট্র্যাকারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাসের অবস্থান পূর্বেই জানতে পারবেন তাই বাস আসার পূর্বেই তারা নির্দিষ্ট স্টপেজে দাঁড়াতে পারবে। কোনো শিক্ষার্থীকে বাসে উঠানামা করতে বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হবে না। ড্রাইভার ও নিরাপদে বাস চালনা করতে পারবেন। ফলে মাভাবিপ্রবির পরিবহন সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে। পরিবহন পরিচালক চাইলে অনায়াসেই গত ৩ মাসের প্রত্যকটি গাড়ির চলাচলের হিসাব খুব সহজেই পাবেন। এমনকি পরিবহনগুলো অন-অফ করলেও নোটিফিকেশন আসবে। কেউ চাইলে নোটিফিকেশন অফ করে রাখার ও সুযোগ থাকছে।
বাসে জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম সংযুক্ত করার ব্যাপারে মাভাবিপ্রবির পরিবহন পরিচালক খান মো. মূর্তজা রেজা লিংকন বলেন, আমাদের জিপিএস ট্র্যাকার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দ্বারা অনুমোদিত। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সেবা ব্যবস্থাকে আরো যুগোপযোগী করতে চাচ্ছি, যেমন বাসগুলোতে জিপিএস ট্রাকিং সিস্টেম বাসানোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের মোবাইল- ল্যাপটপে নির্দিষ্ট অ্যাপস বা সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়টি বাস কোথায় আছে, কোন রোডম্যাপ অনুসরণ করে যাতায়াত করছে তা দেখতে শিক্ষার্থীরা দেখতে পারবে, এবং উন্নত পরিবহন সেবা গ্রহণ করতে পারবে। তার ফলে প্রথম বাসটিতে শিক্ষার্থীদের উঠার প্রবণতা কমবে কারন তারা নিজেরাই জানবে পেছনে আরো কয়টি বাস আসছে এবং সেগুলো কত দূরত্বে অবস্থান করছে। তাছাড়াও শিক্ষকদের পরিবহন রিক্যুইজিশনের জন্য আমরা অটোমেশন পদ্ধতি চালু করতে চলেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পরিবহনের জন্য শিক্ষকেরা আবেদন করবেন। আবেদনের সময় ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় অনলাইনেই রিক্যুইজিশন দেয়া হবে। ফলে খুব দ্রুত গতিতেই অটোমেশন পদ্ধতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে মাভাবিপ্রবির পরিবহন বিভাগ। নিরাপদে বাসে উঠানামা করতে অবশ্যই শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট স্টপেজ মেনে চলতে হবে।
বিএসডি/ এলএল