আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার নতুন নিরাপত্তা চুক্তির নিন্দা জানিয়ে উত্তর কোরিয়া বলেছে, এই চুক্তি বৈশ্বিক পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতায় উসকানি দিতে পারে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিপজ্জনক’ এই নিরাপত্তা চুক্তি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্যকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলবে।
দক্ষিণ চীন সাগরে চীনকে মোকাবিলা করতে প্রভাবশালী পশ্চিমা তিন দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে অকাস নামের নতুন নিরাপত্তা চুক্তির ঘোষণার কয়েকদিন পরই এই সমঝোতা বড় ধরনের সমালোচনার মুখে পড়ে। ঐতিহাসিক এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের জন্য উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সরবরাহের কথা বলা হয়েছে।
পরমাণু শক্তিধর দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তিধর সদস্য ফ্রান্সও এই চুক্তির কঠোর সমালোচনা করেছে। অকাসের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফ্রান্স বলেছে, এই চুক্তির মাধ্যমে তাদের ‘পিঠে ছুরি মারা হয়েছে।’
তিন দেশের নিরাপত্তা চুক্তির উল্লেখ করে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এই চুক্তি ‘একেবারে অনাকাঙ্ক্ষিত এবং বিপজ্জনক’ কাজ; যা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্যকে বিপর্যস্ত করবে এবং পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার সূচনা করবে
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার নতুন নিরাপত্তা চুক্তির তীব্র সমালোচনা করেছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝ্যাও লিজিয়ান বলেছেন, এই জোট আঞ্চলিক শান্তি মারাত্মক ক্ষতির মুখে ফেলেছে… এবং অস্ত্রের প্রতিযোগিতা তীব্র করছে।
পিয়ংইয়ং বলেছে, এটি খুবই স্বাভাবিক যে, প্রতিবেশী দেশগুলো— (যেমন) চীন এ ধরনের পদক্ষেপকে ‘এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার দায়িত্বজ্ঞানহীন হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।’
নতুন এই নিরাপত্তা চুক্তির ফলে গত ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র তাদের সাবমেরিন প্রযুক্তি অস্ট্রেলিয়াকে সরবরাহ করবে; যা অতীতে শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য পেতো।
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার এই নতুন উদ্যোগে চীন, উত্তর কোরিয়ার পাশাপাশি স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয়েছে ফ্রান্স। কারণ তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে অস্ট্রেলিয়ার সাথে তাদের পূর্ব-স্বাক্ষরিত বহু কোটি ডলারের একটি সমঝোতার অবসান ঘটেছে।
২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার মূল্যের সেই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। ওই চুক্তির আওতায় অস্ট্রেলিয়ার জন্য ১২টি সাবমেরিন নির্মাণ করার কথা ছিল।
কিন্তু অকাস চুক্তিটি ফ্রান্সের জন্য একদিকে অর্থনৈতিক ধাক্কা। তেমনি নতুন এই নিরাপত্তা চুক্তির ঘোষণা ফরাসি নেতাদের জন্য বিস্ময়করও, কারণ এ বিষয়ে তাদের কোনো ধারণাই ছিল না। নতুন এই জোট গঠনের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ফ্রান্সকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়।
সূত্র: বিবিসি।