প্রযুক্তি ডেস্ক,
অস্ট্রেলিয়া সরকারের এক আইন অনুযায়ী, সংবাদ প্রতিবেদন প্রচারের জন্য টাকা দিতে হবে গুগলকে। এ টাকা পাবে গণমাধ্যমগুলো। কিন্তু এতে নারাজ অনলাইন জগতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানটি। এতে বাধ্য করা হলে অস্ট্রেলিয়ায় সার্চ ইঞ্জিন সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে গুগল।
প্রতি মাসে গুগলের সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করেন ১ কোটি ৯০ লাখ অস্ট্রেলীয়। কোম্পানিটি সার্ভিস বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলে ভুক্তভোগী হবেন এই বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারী। এটি বাস্তবায়ন হলে গুগলে তারা কোনো কিছু খুঁজতে পারবেন না।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়ছে।
গত ২২ জানুয়ারি বিষয়টি সরাসরি সরকারকে জানিয়েও দিয়েছে গুগল। তাদের মতে, সরকারের এ সিদ্ধান্ত অস্ট্রেলিয়ার গণতন্ত্রকামী মানুষের জন্য হুমকিস্বরূপ।
গুগলের অস্ট্রেলিয়ান ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেল সিলভা জানান, সরকারের আইনটিকে ‘কার্যকরী’ করে গড়ে তুলতে এতে পরিবর্তন চায় তার প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে তারা গণমাধ্যমগুলোকে কন্টেন্টের জন্য অর্থও দিতে ইচ্ছুক এবং বিশ্বব্যাপী এ ধরনের ৪৫০টি চুক্তি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন জানান, এ হুমকিতে ভ্রুক্ষেপ করবে না সরকার।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক। দেশে কী করা যাবে, সে বিষয়ে আইন প্রনয়ণ করে অস্ট্রেলিয়া। এটা আমাদের পার্লামেন্ট থেকে এসেছে, সরকার থেকে এসেছে। আর এভাবেই অস্ট্রেলিয়ায় সবকিছু হয়। আর যারা এভাবে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক, তাদেরকে স্বাগতম।’ ‘কিন্তু আমরা কোনো হুমকিতে ভ্রুক্ষেপ করি না।’
এদিকে, বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের লবিস্ট হিসেবে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘রিসেট অস্ট্রেলিয়া’র মতে, গুগল রীতিমতো অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে।
বিবাদমান নিয়মটি যাদের মস্তিষ্কপ্রসূত সেই অস্ট্রেলিয়ান কম্পিটিশন অ্যান্ড কনজ্যুমার কমিশনের প্রধান রড সিমস জানান, এর মাধ্যমে আলোচনায় বসার পথ সৃষ্টি হয়েছে। সচরাচর এমনটা না হলেও এর মাধ্যমে উভয়পক্ষ দর কষাকষি করতে পারে। কেবল এই পদ্ধতিতেই ব্যবসায়িক চুক্তিগুলো করা সম্ভব।
এদিকে গুগলের এমন অবস্থানকে আশঙ্কাজনক বলে মনে করেন লেবার পার্টির শ্যাডো মিনিস্টার মিশেল রাউল্যান্ড।
তিনি বলেন, ‘কোটি কোটি ব্যবহারকারীকে সমস্যায় না ফেলে কেন গণমাধ্যমের পাশা দাঁড়ানো গেল না, ট্রেজারার জোশ ফ্রাইডেনবার্গ এবং যোগাযোগ মন্ত্রী পল ফ্লেচারকে অবশ্যই এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।’
সার্চ রেজাল্টে আসা সংবাদ কন্টেন্টের জন্য গুগল যখন ৩০০টি ফ্রেঞ্চ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলো, সেদিনই অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে এমন ঘোষণা দিল প্রতিষ্ঠানটি।
বিএসডি/আইপি