আন্তর্জাতিক ডেস্ক
স্বর্ণ, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাসসহ অসংখ্য মূল্যবান খনিজ সম্পদের উৎস আফগানিস্তান। তবে ব্রিটিশ, সোভিয়েত ও মার্কিন পরাশক্তির কবলে পড়ে গত ১০০ বছরেও বদলায়নি ‘লিথিয়ামের সৌদি আরব’ খ্যাত দেশটির চালচিত্র। তালেবানের ক্ষমতা নেয়ার পর এবার, উন্নয়নের নাম করে এসব সম্পদ নিজেদের দখলে নিতে ওঁৎ পাতবে চীন, রাশিয়া।
বছরের পর বছর পরাশক্তির ছায়াযুদ্ধে খুব একটা বদলায়নি আফগানিস্তানের জীবনমান।
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এ জনপদ এখনও বিশ্বের দরিদ্রতম দেশের একটি। চার কোটি মানুষের আফগানে এখনো বেশিরভাগ মানুষই দারিদ্রসীমার নিচে। অবশ্য, বিপুল খনিজ সম্পদের রত্মভাণ্ডার বলা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটি। বর্তমানে তিন ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের খনিজ সম্পদের মজুদ আছে এখানে।
স্বর্ণ, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, নিকেল ছাড়াও লিথিয়াম, কপার আর কোবাল্টের মতো মূল্যবান খনিজের আধার আফগানিস্তান। আছে কপার, স্ক্যানডিয়ামসহ অনেক দুর্লভ মৃত্তিকা মৌল। সরকারি তথ্য বলছে, বর্তমানে ৩০ মিলিয়ন টন কপারের মুজত আছে দেশটিতে। অনাবিষ্কৃত আরো ২৮ মিলিয়ন টন। যার মূল্য কয়েকশো বিলিয়ন ডলার। ২ বিলিয়ন টন লোহার আকরিক, ১.৪ মিলিয়ন টন রেয়ার আর্থ, ২ হাজার সাতশো কেজি স্বর্ণের মজুত আছে আফগানিস্তানে।
গজনিতে আছে অতি মূল্যবান খনিজ লিথিয়ামের বিপুল মজুত। ইলেকট্রিক গাড়ি, মুঠোফোন থেকে শুরু করে ব্যাটারিচালিত নানা প্রযুক্তিতেই কাজে লাগে এ লিথিয়াম। এজন্য আফগানিস্তানকে ‘লিথিয়ামের সৌদি আরব’ আখ্যা দিয়েছেন অনেকে।
গুঞ্জন আছে, খনিজ সম্পদের দখল নিতেই কথিত সন্ত্রাস দমন অভিযানে আফগানে ঢুকেছিলো মার্কিনসহ ন্যাটো বাহিনী। তবে, ২০ বছরেও খনিজ আহরণ করতে পারেনি তারা। আগামীতে দেশটির উন্নয়ন অংশীদার হয়ে খনিজ আহরণে সহায়তা করতে চায় চীন-রাশিয়া।
আরবিসি ক্যাপিটাল মার্কেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হালিমা ক্রফট বলেন, কাবুল দখলের আগেই তালেবানের সাথে যোগাযোগ রেখেছে চীন। আফগানিস্তানের বিপুল খনিজ সম্পদ, বিশেষ করে লিথিয়ামের দিকে নজর তাদের। বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভেও আফগানিস্তানকে যুক্ত করার উদ্যোগ নিচ্ছে দেশটি। তাদের অবশ্যই বড় কোন পরিকল্পনা আছে।
বলা হয়, বিপুল পরিমাণ খনিজ সম্পদ আহরণ করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধশালী দেশের তালিকায় নাম লেখাবে আফগানিস্তান। দেশটিতে বাড়ছে পশ্চিমা বিনিয়োগ।
বিএসডি/এএ