নিজস্ব প্রতিবেদক
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দি নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। তার মুক্তির জন্য সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে দলের নেতারা। অন্যথায় সারা বাংলাদেশে অব্যাহত আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন দলটির কেন্দ্রীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর লালদিঘী মাঠে এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, গোটা বাংলাদেশের মানুষ আজ ফুঁসে উঠেছে, সারা বাংলাদেশে একই আওয়াজ-লাথি মার ভাঙরে তালা, যতসব বন্দিশালা। কিন্তু আমরা বন্দিশালার তালা ভাঙতে চাই না। কেউ কেউ বলেছেন আঙুল বাঁকা করবো, কেউ কেউ বলেছেন অচলাবস্থার সৃষ্টি করবো, কেউ কেউ ইঙ্গিত দিয়েছেন গাড়ি ভাঙচুরের। না, জামায়াত ইসলামী এগুলো করবে না। তবে জামায়াত ইসলামী অন্যায়ের কাছে মাথা নতও করবে না।
তিনি বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিকতায় বিশ্বাসী, আমরা দেশপ্রেমিক সুশৃঙ্খল দল। দেশ গড়ার কাজে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। এ সরকারের সব ন্যায়নীতি, ইনসাফপূর্ণ কাজে আমরা সহযোগিতা করবো। তবে এটাও বলতে চাই, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। এই সংবিধানের অধীনেই প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টামণ্ডলী, বিচারপতিরা শপথ নিয়েছেন। আপনারা সংবিধান অনুসরণ করুন।
তিনি বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী ঘোষণা করছে— আমাদের আপনারা (সরকার) বাধ্য করবেন না। ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হলো। ২০ তারিখের (ফেব্রুয়ারি) মধ্যে যদি আমরা আমাদের প্রিয় নেতাকে বুকে জড়িয়ে ধরে মুক্তমঞ্চে আনতে না পারি, তাহলে গোটা বাংলাদেশজুড়ে অব্যাহত কর্মসূচি চলবে। আমরা অনেক ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েছি। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে পেছনে যাবার জায়গা থাকে না। সুতরাং বাংলাদেশ ফুঁসে ওঠার আগে, উত্তাল তরঙ্গের ঢেউ সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আগে আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আজহার ভাইয়ের মুক্তি চাই, অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর শাহজাহান চৌধুরী। এতে দলটির চট্টগ্রামের উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগরের জ্যেষ্ঠ নেতারা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন জামায়াত ইসলামীর নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এ টি এম আজহারকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর দেওয়া রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে আপিল বিভাগ। এ রায় রিভিউ চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন এ টি এম আজহারুল ইসলাম। ২০ ফেব্রুয়ারি এর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।