নিজস্ব প্রতিবেদক
মেট্রোরেলে যাত্রীদের জন্য আধুনিক টিকিটিং ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ‘ইউনিভার্সেল টিকিটিং সিস্টেম’ (ইউটিএস) নামে এই নতুন ব্যবস্থায় যাত্রীরা সহজেই ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন। পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও টিকিট কাটা যাবে।
ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, নতুন এই ব্যবস্থা চালুর জন্য ইতিমধ্যে প্রাথমিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শেষে ঠিকাদার নিয়োগ, যন্ত্রপাতি স্থাপন ও অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সিস্টেম চালু করতে সময় লাগবে প্রায় ছয় মাস।
ডিএমটিসিএলের আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চালু থাকা ‘ক্লোজ লুপ’ সিস্টেমে শুধুমাত্র জাপানি প্রযুক্তির নির্দিষ্ট কার্ড ব্যবহার করা যায়। এতে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে ভাড়া পরিশোধ সম্ভব নয়। নতুন ব্যবস্থায় স্টেশনগুলোতে আধুনিক পাঞ্চিং যন্ত্র স্থাপন করা হবে, যেখানে সহজেই ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়াও যাত্রীরা মোবাইল অ্যাপ যেমন বিকাশ, রকেট, নগদ ইত্যাদির মাধ্যমে নির্ধারিত দূরত্ব অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করে কিউআর কোড সংগ্রহ করতে পারবেন। এই কোড স্ক্যান করে তারা ট্রেনে উঠতে ও নামতে পারবেন—দাঁড়াতে হবে না দীর্ঘ লাইনে।
বর্তমানে প্রায় ৫৫ শতাংশ যাত্রী এমআরটি বা র্যাপিড পাস ব্যবহার করেন। তবে কার্ডের সংকট দীর্ঘদিন ধরেই ভোগাচ্ছে যাত্রীদের। অপরদিকে, একক যাত্রার কার্ডেও দেখা দিয়েছে ঘাটতি। অনেকে কার্ড জমা না দিয়ে সঙ্গে নিয়ে চলে যাওয়ায় ও অনেক কার্ড বিকল হয়ে যাওয়ায় সমস্যা বাড়ে।
নতুন ব্যবস্থায় এই দুর্ভোগ অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, যাত্রীর চাহিদা মতো কার্ড বা টিকিট সরবরাহ করা আমাদের দায়িত্ব। ভাড়া পরিশোধ যত সহজ হবে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য তত বাড়বে। ভারত, সিঙ্গাপুর, হংকংসহ অনেক দেশে এ ব্যবস্থা চালু আছে। যাত্রীসংখ্যা বাড়ানো এবং যাত্রীদের সহজে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।
এদিকে বুয়েটের পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সামছুল হক বলেছেন, কার্ড চাইলেও যদি কর্তৃপক্ষ দিতে না পারে, সেটা অত্যন্ত হতাশাজনক। তবে নতুন টিকিটিং সিস্টেম চালু হলে যাত্রী দুর্ভোগ কমবে এবং যাতায়াতে গতি আসবে।