একে তো পাহাড়সমান ঋণ, তার ওপর লিওনেল মেসিকে ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ—টাকার হিসাব নিয়ে ভাবতেই হচ্ছে বার্সেলোনাকে।
এই হিসাব মেলাতে বার্সাকে স্কোয়াড থেকে কিছু খেলোয়াড় ছাড়তেই হবে, তা এখন ‘ওপেন সিক্রেট’। লা লিগার বেতন কাঠামোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে এ ছাড়া আর পথ নেই কাতালান ক্লাবটির।
বার্সার মূল মাথাব্যথা এখন মেসিকে নিয়ে। চলতি মাস শেষ হওয়ার সঙ্গে মেসির বর্তমান চুক্তির মেয়াদও ফুরাবে। এত দিনেও তাঁর চুক্তি নবায়ন করতে পারেনি বার্সা। আর্জেন্টাইন তারকাও চুক্তি নবায়ন নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন।
এদিকে বেশ কিছু ক্লাব টাকার বস্তা নিয়ে মেসির দিকে তাকিয়ে আছে। পরিস্থিতি যখন এমন, তখন বার্সাকে তো অঙ্ক কষতেই হবে। কীভাবে মেসিকে ধরে রাখা যায় ও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে তাঁর বেতনের ব্যবস্থা কীভাবে করা যায়—সেই অঙ্কই কষতে হচ্ছে বার্সাকে।
ক্লাবটিতে মেসির বর্তমান বার্ষিক পারিশ্রমিক প্রায় ৭১ মিলিয়ন ইউরো। এদিকে স্কোয়াড শক্তিশালী করতে বার্সা এরই মধ্যে চার নতুন খেলোয়াড় দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে—সের্হিও আগুয়েরো, এরিক গার্সিয়া, এমারসন ও মেম্ফিস ডিপাই। এর মধ্যে শুধু এমারসন বাদে তিনজনই কোনো দলবদল ফি ছাড়াই দলে এসেছেন।
খেলোয়াড়দের বেতন দিতে তাই তহবিল সংগ্রহের বিকল্প রাস্তা নেই বার্সার কাছে। মেসির নতুন চুক্তির বাইরেই এই হিসাব কষতে হচ্ছে ক্লাবটিকে। কাতালান রেডিও আরএসিওয়ান জানিয়েছে, মেসি চুক্তি নবায়নে সম্মত হলে বার্সাকে শুধু পারিশ্রমিক বাবদ বার্ষিক ন্যূনতম ২০০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২ হাজার ২৩ কোটি টাকা) জোগাড় করতে হবে।
এ জন্য স্কোয়াড থেকে খেলোয়াড় বিক্রি করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ নেই। অন্তত কিছু খেলোয়াড় বেচলে তাঁদের বেতনের অঙ্কটা থেকে এই তহবিলের বেশির ভাগ টাকা সংগ্রহ করা যাবে।
বার্সার আর্থিক অবস্থা কতটা সংকটাপন্ন সেটি বুঝিয়ে দেয় ক্লাব সভাপতি হোয়ান লাপোর্তার কিছুদিন আগের একটি মন্তব্য। তিনি জানিয়েছিলেন, যদি ১০০ মিলিয়ন ইউরো করে বাঁচানো যায়, তাহলে প্রতি ১০০ মিলিয়ন ইউরোর মধ্যে তাঁরা ২৫ মিলিয়ন ইউরো খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকে ব্যবহার করতে পারবেন।
বাকিটা চলে যাবে ঋণ পরিশোধে। আর তাই মোটামুটি বড় অঙ্কের বেতন পান, এমন কিছু খেলোয়াড় বেচে দেবে বার্সা বলে মনে করছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা। অন্তত কোচ রোনাল্ড কোমানের পরিকল্পনায় নেই, এমন খেলোয়াড়দের ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বাকিদের হয়তো বেতন কমাতে হবে বার্সায় থাকতে হলে।
এখন মেসিকে আটকাতে বার্সা কী করে, সেটাই দেখার বিষয়। বার্সার সঙ্গে মেসির বর্তমান চুক্তির মেয়াদ আর চার দিন।