নিজস্ব প্রতিবেদক:
নওফেল বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার দাড়িগাছা গ্রামের ঈসরাইল শেখের ছেলে ও দাড়িগাছা ইসলামি উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। ১৮ জুন তাকে হত্যা করে জঙ্গলে লাশ ফেলে রাখা হয়। ২০ জুন জঙ্গল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নওফেলের বাবা ঈসরাইল শেখ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকা থেকে ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার কিশোরের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ফোন হাতিয়ে নিতে বন্ধু নওফেলকে হত্যার পরিকল্পনা করে ওই কিশোর। পরিকল্পনা অনুযায়ী, জন্মদিনে ফুর্তি করার জন্য ধূমপানের কথা বলে নওফেলকে বাড়ির পাশের একটি জঙ্গলে ডেকে নেয়। একপর্যায়ে নওফেলের গলায় মাফলার পেঁচিয়ে মজার ছলে ওই কিশোর বলে, ‘যদি ফাঁস লাগিয়ে তোকে হত্যা করি মামা’। নওফেল আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাকে বলে, ‘তুমি তো আমাকে হত্যা করবে না মামা’। এরপর অভিনয়ের ছলে নওফেলের গলায় লাগানো মাফলার ফাঁস দিয়ে পেছন থেকে গাছের সঙ্গে টেনে ধরে ওই কিশোর। এতে ছটফট করতে করতে নিস্তেজ হয়ে পড়ে নওফেল। তখন লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে গ্রেপ্তার কিশোর। এরপর নওফেলের লাশ জঙ্গলে গুম করে মুঠোফোন নিয়ে চম্পট দেয়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, বন্ধুকে ঠান্ডা মাথায় হত্যার পর দুপুরে তার এক বান্ধবীকে শহরের সাতমাথায় ডেকে আনে ওই কিশোর। এরপর পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে এক দোকানে নওফেলের ফোনটি বিক্রি করে। মুঠোফোন বিক্রির টাকা পেয়ে বান্ধবীকে নিয়ে শহরের গালাপট্টি এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে ওঠে সে। বান্ধবীকে নিয়ে ফুর্তির পর মুঠোফোন বিক্রির অর্থ থেকে দেড় হাজার টাকা ওই মেয়ের হাতে দেয়। ২০ জুন নওফেলের লাশ উদ্ধার হলে ওই কিশোর গাজীপুরে আত্মগোপন করে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, নওফেল হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে গোয়েন্দা পুলিশের সমন্বয়ে একটি চৌকস দল গঠন করা হয়। প্রথমে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শহরের একটি দোকান থেকে নওফেলের ব্যবহৃত ফোনটি উদ্ধার করা হয়। এরপর মুঠোফোনের সূত্র ধরে আটক করা হয় হোটেলে সময় কাটানো ওই বান্ধবীকে। পরিচয় নিশ্চিতের পর মূল আসামিকে সোমবার টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার কিশোরের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, জঙ্গল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাফলারটি উদ্ধার করা হয়।