নিজস্ব প্রতিবেদক:
একজন বৈধ গ্রাহকও যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন তার জন্য ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যক্রমের আওতায় মোবাইল ফোন নিবন্ধনের সময়সীমা আরও এক মাস বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)।
বুধবার (৬ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানান টিক্যাবের আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক।
তিনি বলেন, গত ১ অক্টোবর ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এনইআইআর চালুর পর প্রথম তিন দিনে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার মোবাইল ফোন অবৈধ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। প্রতিদিনই এ অবৈধ শনাক্তের সংখ্যা বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বেশির ভাগ গ্রাহক নিম্ন-মধ্যবিত্ত। প্রযুক্তি সম্পর্কে তাদের ধারণা কম থাকায় অনেক ব্যবহাকারী জানেনই না তাদের হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি বৈধ নাকি অবৈধ। এমনকি এনইআইআর ব্যবস্থার মাধ্যমে মোবাইল ফোন নিবন্ধনের পুরো প্রক্রিয়াটি তাদের জন্য এখনো বেশ জটিল। এ অবস্থায় প্রতারক চক্রের কারণে যাতে গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকেই মূল ভূমিকা পালন করতে হবে।
টিক্যাবের আহ্বায়ক বলেন, ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যক্রম একটি যুগোপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ। মোবাইল ফোন চুরি, ছিনতাই, সরকারি রাজস্ব ফাঁকিরোধ ছাড়াও ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এনইআইআর কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিটিআরসির হিসাব মতে দেশে বর্তমানে নেটওয়ার্কে সক্রিয় সেটের সংখ্যা প্রায় ২৩ কোটি। ১ অক্টোবর এনইআইআর ব্যবস্থা চালুর পর দেশে প্রতিদিন এক লাখ ১০ হাজার নতুন মোবাইল ফোন নিবন্ধিত হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশই অবৈধ ও নকল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ হিসাবে প্রতিদিন গ্রাহকের হাতে আসা প্রায় ১১ হাজার মোবাইল ফোন অবৈধ ও নকল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমাদের আশঙ্কা এনইআইআর’র মাধ্যমে যেহেতু ধাপে ধাপে অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধ করা হবে তাই প্রতারক চক্র মোবাইল ফোন বন্ধের আগেই তা গ্রাহকদের কাছে বিক্রির চেষ্টা চালাবে। এতে করে সচেতনতার অভাবে সাধারণ গ্রাহকদের প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে টিক্যাবের পক্ষ থেকে ৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। এগুলো হলো-
>> গ্রাহকস্বার্থ সুরক্ষায় ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার বা (এনইআইআর) কার্যক্রমের আওতায় মোবাইল ফোন নিবন্ধনের সময়সীমা আরও এক মাস বাড়াতে হবে।
>> সচেতনতা বৃদ্ধিতে মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলো ও বিটিআরসিকে যথেষ্ট প্রচার—প্রচারণা চালাতে হবে। মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলোর বিজ্ঞাপনের সাথে নিবন্ধনের বিষয়টি উল্লেখ করা যেতে পারে।
>> যেহেতু সকল গ্রাহকরা নিজেরা অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন না তাই মোবাইল ফোনের শোরুম ও অপারেটরদের কাস্টমার কেয়ারে বিনামূল্যে মোবাইল ফোন নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করলে অনেকটা সুফল পাওয়া যাবে।
>> অবৈধ মোবাইল ফোনের বিপনন বন্ধ করা না গেলে গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই অনিয়ম বন্ধে বিটিআরসিকে নিয়মিত মনিটরিং ও অবৈধ মোবাইল ফোন বিক্রয়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
> প্রবাসীরা তাদের ব্যক্তিগত ফোন দেশে নিয়ে আসেন ও ফেরার সময় সাথে করে নিয়ে যান। তাই প্রবাসীদের দেশে অবস্থানের ভিত্তিতে ব্যক্তিগত ফোন নিবন্ধনের বিশেষ ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।
বিএসডি/ আইকে