আন্তর্জাতিক ডেস্ক
তালেবানের আপত্তির মুখে, ৩১ আগস্টের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্র।
তালেবানের আপত্তির মুখে, ৩১ আগস্টের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্র। কাবুল বিমানবন্দরে দেশ ছাড়তে মরিয়া মানুষের ভিড়ে অবস্থা বেগতিক হওয়ায় সেখানে আরও হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অবশ্য তা প্রতিরোধে মার্কিন সেনারা প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে। তালেবানের পক্ষ থেকে আফগান নাগরিকদের দেশ ছেড়ে না যেতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংকট সমাধানে বৈঠকে বসছেন জি সেভেন ভুক্ত দেশগুলোর নেতারা।
যুক্তরাষ্ট্রের তিন ভুলে সৃষ্টি হয়েছে আফগানিস্তান সংকট। মোটা দাগে কী সেই সব ভুল? তাই নিয়ে এক সপ্তাহ পরও চলছে কাটাছেঁড়া। মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে তিনটি কারণ। এ প্রতিবেদনে থাকছে সেই বিষয়গুলো।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি বছরের শুরুতে ঘোষণা দেন সেপ্টেম্বরের মধ্যে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সেনাদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেবেন। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছিল। এরপরও কাবুলে তালেবানের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর দেশটি থেকে সামরিক-বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে আনতে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থায় পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন তালেবানের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে বাইডেন প্রশাসনকে।
মার্কিন প্রশাসনের ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের তিনটি ভুলকে বড় করে দেখা হচ্ছে গণমাধ্যমে। নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, তালেবানের সক্ষমতা বুঝতে না পারা, আগাম পরিকল্পনা না থাকা আর আশরাফ ঘানি প্রশাসনের ওপর অতিরিক্ত বিশ্বাসই কাল হয়েছে ওয়াশিংটনের।
মার্কিন গোয়েন্দারা আদতে বুঝতেই পারেননি, তালেবানের শক্তি কতটা। তাদের ধারণা ছিলো পুরো আফগানিস্তানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় তালেবানের অন্তত ১৮ মাস সময় লাগতে পারে। এতে সেনা প্রত্যাহার, আফগানদের নিরাপত্তা ও বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে আনতে যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে মনে করা হলেও, বাস্তবে এমনটা হয়নি।
যেহেতু ধরে নেওয়া হয়েছিল তালেবানের আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণে সময় সাপেক্ষ, তাই জরুরি ভিত্তিতে দেশটি থেকে আফগান নাগরিক ও বিদেশিদের সরিয়ে আনার ইচ্ছা কিংবা আগাম পরিকল্পনা, কোনোটাই ছিল না ডেমোক্র্যাট প্রশাসনের। যার খেসারত এখন দিতে হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ও অস্ত্রে, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে ঢেলে সাজানো হয়েছিল। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্র ভেবেছিল, তালেবানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে আফগান সরকারি বাহিনী। এতে রক্তপাতের পথ ছেড়ে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সঙ্গে আলোচনায় বসবে তালেবান। কিন্তু বাস্তবে ঘটলো তার উল্টো। তালেবানের সক্ষমতা টের পেয়ে উল্টো দেশ ছেড়ে ভয়ে পালিয়ে যান মার্কিন মদদপুষ্ট প্রেসিডেন্ট ঘানি।
বিএসডি/এএ