আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়ানোর কোনও ইচ্ছা নেই ব্রাজিলের। মঙ্গলবার ব্রাজিল সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী আলেকজান্দ্রে পাদিলহা এ কথা জানান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইস্পাতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর ব্রাজিলের এই অবস্থান জানানো হয়। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
কানাডার পর যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম ইস্পাত রফতানিকারক দেশ ব্রাজিল। ২০২৪ সালে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে ৪.০৮ মিলিয়ন টন ইস্পাত রফতানি করেছে। মন্ত্রী পাদিলহা সাংবাদিকদের বলেন, সরকার এ বিষয়ে কোনও আলোচনা করেনি। তবে আমরা বাণিজ্যিক অচলাবস্থার বিরোধী। শুল্ক ইস্যুতে ব্রাজিলের সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও বাণিজ্য যুদ্ধে জড়াবে না এবং অন্যকেও উৎসাহিত করবে না।
তবে, গত মাসে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার বক্তব্যের বিপরীতে এই মন্তব্য করা হলো। প্রেসিডেন্ট লুলা গত মাসে বলেছিলেন, ট্রাম্প যদি ব্রাজিলের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন, তাহলে ব্রাজিলও প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেবে।
৭৯ বছর বয়সী লুলা বলেছিলেন, এটা খুবই সহজ। যদি তিনি ব্রাজিলের পণ্যের ওপর কর আরোপ করেন, তাহলে ব্রাজিলও যুক্তরাষ্ট্র থেকে রফতানি করা পণ্যের ওপর কর আরোপ করতে আগ্রহী।
তিনি আরও বলেছিলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নত করতে এবং চীনের পর ব্রাজিলের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করতে চান।
ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রী ফার্নান্দো হাদ্দাদ বলেন, ট্রাম্পের একতরফা শুল্ক বিশ্ব অর্থনীতির উন্নতির জন্য বিপরীতমুখী। তবে তিনি বলেন, এই নতুন শুল্ক কেবল ব্রাজিলকে লক্ষ্য করে না, বরং পুরো বিশ্বকে লক্ষ্য করে। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া কীভাবে মোকাবিলা করা হবে তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ব্রাজিল অন্যান্য দেশগুলোর পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করবে।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে মার্কিন উৎপাদকদের অন্যায্য প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে বাধা দেওয়ার জন্য একই ধরনের ইস্পাত শুল্ক আরোপ করেছিলেন। তবে, আমদানি কোটাতে সম্মত হওয়ার পর ব্রাজিলকে শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
এজিএল কার্গো রফতানি কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক জ্যাকসন ক্যাম্পোস এএফপিকে বলেন, ব্রাজিল প্রতিশোধের পরিবর্তে কূটনীতির পথ বেছে নিতে পারে। তিনি বলেন, কূটনীতির মাধ্যমে আলোচনা করা হবে অন্যতম বিকল্প।
ব্রাজিলে আমেরিকার চেম্বার অব কমার্স এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা আলোচনামূলক সমাধান আশা করছে, কারণ ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্ক এই খাতে ব্রাজিলের রফতানিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। ২০২৪ সালে ব্রাজিল ৫.৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ইস্পাত এবং লোহা যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করেছে, যা ব্রাজিলের রফতানির প্রধান গন্তব্য। একই বছরে ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রে ২৬৭ মিলিয়ন ডলারের অ্যালুমিনিয়াম রফতানি করেছে, যা ব্রাজিলের বিশ্বব্যাপী বিক্রয়ের ১৬.৭ শতাংশের সমান।