আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কম করের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিশ্বের ব্যবসায়ীদের তাদের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, ব্যবসায়ীরা যদি অন্য কোথাও পণ্য উৎপাদন করেন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করার সময় তাদের পণ্যের ওপর চড়া শুল্ক আরোপ করা হবে।
“আমেরিকা ফিরে এসেছে এবং ব্যবসার জন্য তৈরি,” ট্রাম্প ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের দাভোস সম্মেলনে আগত কর্পোরেট নেতাদের বলেন।
“বিশ্বের প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য আমার বার্তা খুব সহজ—আসুন, যুক্তরাষ্ট্রে এসে পণ্য তৈরি করুন এবং আপনাদের জন্য ধার্য করা কর থাকবে বিশ্বের সবচেয়ে কম করের মধ্যে,” ট্রাম্প বলেন।
“কিন্তু আপনি যদি আমেরিকায় পণ্য তৈরি না করতে চান, যেটা আপনার অধিকার, তাহলে আপনাকে শুল্ক দিতে হবে।”
হোয়াইট হাউসে তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হবার দু’দিন পর ট্রাম্প বলেন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে কর্পোরেট ট্যাক্স ২১ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে চান, তবে সেজন্য রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসে তার রাজনৈতিক মিত্রদের সম্মতি লাগবে। আইন প্রণেতারা আলোচনা করছেন কীভাবে ২০১৭ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ছাঁট করা আয়কর এবং কর্পোরেট ট্যাক্স নতুন করে সাজানো যায়।
যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপকে প্রয়োজনীয় এলএনজি (তরলকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহ করবে বলে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দেন। তবে তিনি অভিযোগ করেছেন যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের জোটভুক্ত ২৭টি দেশে বিনিয়োগ ও উৎপাদনরত মার্কিন কোম্পানিগুলোর ওপর অতিমাত্রায় বিধিনিষেধ জারি করে যুক্তরাষ্ট্রর সাথে ‘খুবই অন্যায্য’ ব্যবহার করছে।
বিশেষ করে নতুন নির্মাণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে শুল্ক এবং পরিবেশগত প্রভাব পর্যালোচনা নিয়ে অভিযোগ করেন ট্রাম্প এবং বলেন, “এসব হচ্ছে এমন জিনিস যা তাদের দিয়ে করানো উচিত না।”
ভিডিওবার্তায় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দেন যে তার প্রশাসন বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি বলে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে, ‘একটি উৎপাদনকারী পরাশক্তিতে’ পরিণত করবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মেয়াদের চার বছরে তার সরকার প্রতিটি নতুন প্রবিধানের বিপরীতে ১০টি প্রবিধান বাতিল করবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, সৌদি আরব এবং তেল রপ্তানিকারী দেশগুলোর জোট ওপেক-কে তেলের দাম কমানোর জন্য অনুরোধ করবেন, যেন বিশ্ব অর্থনীতি চাঙ্গা হয়।
তিনি দাবী করেন যে, বিশ্ব তেলের দাম বর্তমান ব্যারেল প্রতি ৭৭ ডলার থেকে কমানো হলে ইউক্রেনে যুদ্ধ সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যাবে।” রাশিয়ার নিজস্ব তেল উৎপাদনের আয় প্রতিবেশী ইউক্রেনে তার তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ অর্থায়ন করতে সাহায্য করে।
ট্রাম্প বলেন যে, বিশ্ব অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র “শুধু চায় যে অন্যান্য দেশ তার সাথে ন্যায্য আচরণ করবে।”
তিনি আরও বলেন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনের সাথে ‘ন্যায্য সম্পর্ক’ চায়।
“আমরা সুবিধা নিতে চাই না,আমরা শুধু লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই,” ওয়াশিংটন-বেইজিং সম্পর্ক নিয়ে বলেন ট্রাম্প।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা