আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যৌথ সামরিক মহড়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াকে ব্যাপকভাবে নিরাপত্তাজনিত হুমকিতে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং। আগামী সপ্তাহে দেশ দুটির মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত শুরু হতে যাচ্ছে। মূলত সেই মহড়া প্রসঙ্গে সতর্ক করে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) কিম ইয়ো জং হুঁশিয়ারি সম্বলিত বার্তাটি দেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া আগামী সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে। সে লক্ষ্যে তারা এরই মধ্যে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শুরু করে দিয়েছে। যদিও উত্তর কোরিয়া তাদের এই মহড়া আন্তঃ কোরীয় সম্পর্ক উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে সতর্ক করেছে। এরপরও দুই দেশ মহড়াটি শুরু করতে যাচ্ছে।
বিবৃতির মাধ্যমে কিম ইয়ো জং বলেন, মহড়াটি সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত এবং আত্ম-ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম। যা উত্তর কোরিয়ার মানুষের জন্য হুমকি এবং কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে।
তিনি আরও বলেন, বারবার আমাদের সতর্কতা উপেক্ষা করে বিপজ্জনক যুদ্ধের অনুশীলনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াকে ব্যাপকভাবে নিরাপত্তাজনিত হুমকির মুখে পড়তে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, উত্তেজনা নিরসনে যখন দুই দেশ পুনরায় সংযুক্ত হচ্ছে তখনই এ ধরনের মহড়ায় যোগ দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ‘বিশ্বাস ঘাতকের আচরণ’ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
যদিও উত্তর কোরিয়ার এই বিবৃতি প্রসঙ্গে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মার্টিন মেইনার্সের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ সময় প্রশিক্ষণের বিষয়ে কথা বলা নীতিবিরুদ্ধ বলেও দাবি করেন তিনি।
এ দিকে দ. কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রও মহড়াটিকে সামনে রেখে প্রাথমিক প্রশিক্ষণের বিষয়েও কোনো মন্তব্য করেননি। মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে তিনি দাবি করেন, নিয়মিত অনুশীলনের সময়, মাত্রা এবং পদ্ধতি নিয়ে এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের সূত্রে সাড়ে ২৮ হাজার সৈন্য নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টেশন বানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তীকালে শান্তি চুক্তির পরিবর্তে যুদ্ধ বিরতির মাধ্যমে তারা দক্ষিণ কোরিয়া ছেড়ে যায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থেকে রেহাই পেতে উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক ও মিসাইল কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য সম্মত হয়। পরে এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মহড়াও সীমিত করা হয়।
যদিও ২০১৯ সালে সেই আলোচনা মুখ থুবড়ে পড়ে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া জানায় তাদের মধ্যে সব সময়ই কূটনীতিক আলোচনা উন্মুক্ত। তখন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তারা একে অপরের ওপর নির্ভর করবে বলেও জানিয়েছিল। এছাড়াও তারা সামরিক মহড়ার আয়োজনের পরিকল্পনা করে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার কিমের বোন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রম বলে দেয় তাদের কূটনীতিক আলোচনা এক ধরনের ভণ্ডামো এবং কোরীয় অঞ্চলকে উত্তেজনার মুখে ফেলবে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহারের মাধ্যমেই কেবল শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হুমকির জবাব তারা চরমভাবে দেবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন উ. কোরিয়ার দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি কিম ইয়ো জং।
বিএসডি/এমএম