আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গত দুই মাসে আফগানিস্তানের বহু এলাকা দখল করেছে তালেবান। ২০০১ সালে মার্কিন হামলার মুখে ক্ষমতাচ্যুত তালেবানরা এই প্রথম স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দেশটির বিশাল অঞ্চল নিজেদের দখলে নিতে পারলো।
গত মাসে আফগানিস্তান ত্যাগ করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী। এর পরপরই দ্রুত সরকারি বাহিনীর হাত থেকে একের পর এক এলাকা ছিনিয়ে নিতে শুরু করে তালেবান।
বিবিসির আফগান সার্ভিস পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোসহ দেশজুড়ে নিজেদের শক্ত উপিস্থিতি জানান দিচ্ছে তালেবান। কুন্দুজ, হেরাত, কান্দাহার ও লস্কর গাহের মতো বড় শহরগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে তারা। দখলকৃত এলাকাগুলোর পুলিশ সদরদপ্তর থেকে শুরু করে সব প্রশাসনিক কেন্দ্র ও সরকারি প্রতিষ্ঠান এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে।
তালেবানদের ঐতিহ্যবাহী শক্তিশালী ঘাঁটিগুলো আফগানিস্তানের দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলীয় হেলমান্দ, কান্দাহার, উরুজগান ও জাবুল প্রদেশে। তবে দক্ষিণের পার্বত্য অঞ্চল ফারাইয়াবের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বের পার্বত্য অঞ্চল বাদাখশানেও তাদের শক্ত অবস্থান রয়েছে। আফগানিস্তানের প্রায় দেড় কোটি বাসিন্দার অর্ধেক হয় তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কিংবা যেসব এলাকায় তালেবান উপস্থিত ও নিয়মিত সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালায় সেখানে বাস করে।
আফগান সরকার অবশ্য তালেবানের দখল করা এলাকা ছিনিয়ে নিতে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। সম্প্রতি তালেবানদের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাতে শুরু করেছে মার্কিন বিমান বাহিনী।
এই মুহূর্তে আফগান সরকারের হাতে যেবস এলাকা রয়েছে সেগুলো সমতল কিংবা নদী তীরবর্তী। এসব এলাকায় জনবসতিও বেশি। তালেবানের দখলকৃত অঞ্চলগুলোতে অবশ্য জনবসতির ঘণত্ব অনেক কম। এসব এলাকার প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫০ জনেরও কম মানুষের বাস।
সম্প্রতি তালেবানরা আফগান সীমান্তের বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছে। সীমান্ত দিয়ে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির শুল্ক এখন তাদের পকেটেই যাচ্ছে। এই মুহূর্তে কী পরিমাণ কর বা শুল্ক তালেবান পাচ্ছে তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে ইরানের সঙ্গে লাগোয়া ইসলাম কালা সীমান্ত থেকে প্রতি মাসে দুই কোটি ডলারেরও বেশি আয় করা সম্ভব।
বর্তমান সময়/এমএম