নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের রাজনীতিতে নতুন এক সংস্কৃতি হিসেবে উঠে এসেছে আলোচনা এবং ঐকমত্যের চেষ্টা—আর এই ধারাকে ধরে রেখে দেশের ‘ভবিষ্যৎ গঠনমূলক সংস্কার’ এগিয়ে নিতে চান নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, “আলোচনার মাধ্যমে যতদূর ঐকমত্য হবে, ততদূর সংস্কার হবে। বাকি সংস্কার পরবর্তীতে।”
আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও জনআকাঙ্ক্ষা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মান্না এসব কথা বলেন। গণশক্তি সভা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
তিনি বলেন, “মানুষ একটি প্রভাবমুক্ত নির্বাচন চায়। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হলেও অনেক বিষয়ে এখনও মতানৈক্য রয়ে গেছে। আমাদের দেশে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে নিয়মিত আলাপ-আলোচনার যে অভ্যাস ছিল না, এখন তা তৈরি হচ্ছে। এ সংস্কৃতি ধরে রাখতে হবে। কার্যকর গণতন্ত্র চর্চার জন্য এটাই পথ।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে যে অর্জন হয়েছে, তা যেন ব্যর্থতায় পর্যবসিত না হয়, সেদিকে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনমূলক ভূমিকা জরুরি।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন সাবেক সচিব ও কূটনৈতিক আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “সরকারি কর্মকর্তারা প্রজাতন্ত্রের চাকর। এই মনোভাব যদি না থাকে, তাহলে তারা জনগণকে সেবা দিতে পারবেন না। এমন মনোভাব ছাড়া কখনো প্রকৃত পাবলিক সার্ভেন্ট হওয়া সম্ভব নয়।”
সভাটি সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক ও গণশক্তি সভার সভাপতি সাদেক রহমান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আকবর হোসেন, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিব আনোয়ার, বাংলাদেশ জনতার পার্টির চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ নূর এবং নাগরিক নারী ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার।
এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জনতা ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আবু আহাদ আল মামুন, প্রাইম সিভিল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মেহতাজ হোসেন, বিশিষ্ট গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী শারমিন সুলতানা চৈতি এবং জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিশিষ্ট গবেষক আলাউদ্দিন কামরুল, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ইমরান চৌধুরী, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরীর নেতা ওমর ফারুক ও জুবায়ের আল মাহমুদ এবং বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী রুহুল আমিন।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, জুলাই মাসের আত্মত্যাগ ও গণআন্দোলনের ইতিহাস জাতির জন্য এক অনন্য শিক্ষার উৎস। তাই সেই চেতনা থেকে বিচ্যুতি না ঘটিয়ে রাজনৈতিক সংস্কার এবং গণতন্ত্রের অগ্রগতিকে স্থায়ী রূপ দিতে হবে।