ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে নজিরবিহীন যুদ্ধ চলছে। এরই মধ্যে এই যুদ্ধে ইসরায়েলি ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯৩ জনে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এছাড়াও ইসরায়েলের হামলায় দুই হাজার ৭৫০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইসরায়েল’ দাবি করেছে, হামাসের হামলায় এরই মধ্যে ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে দুই হাজার দুই শতাধিক।
শনিবার ভোরে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে হামলা শুরু করে। এতদিন ইসরায়েলের বিপক্ষে শুধুমাত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়েছে ফিলিস্তিন। শনিবারই প্রথমবারের মতো আগে ইসরায়েলে হামলা চালালো ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার এই নজিরবিহীন যুদ্ধ নিয়ে রুদ্ধদ্বার জরুরি অধিবেশন করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। কিন্তু এ ইস্যুতে তারা একটি যৌথ বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের প্রতি হামাসের বিরুদ্ধে কঠোর নিন্দা জানানোর আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। অধিবেশনের পর সাংবাদিকদের কাছে মার্কিন সিনিয়র কূটনীতিক রবার্ট উড বলেন, হামাসের হামলার নিন্দা জানিয়েছে বেশ কিছু দেশ। তবে স্পষ্টতই সবাই নিন্দা জানায়নি। তাদের সম্পর্কে আমি কিছু না বললেও সম্ভবত আপনারা তাদের একটি দেশকে চিনতে পারেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি রাশিয়ার দিকে ইঙ্গিত করেন। ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের সম্পর্ক মারাত্মকভাবে খারাপ হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক চলে প্রায় ৯০ মিনিট বা দেড় ঘণ্টা।
এতে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক শান্তির দূত টোর ওয়েন্সল্যান্ডের ব্রিফিংয়ের ওপর শুনানি হয়। কূটনীতিকরা বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর চেয়ে রাশিয়ার সদস্যরা তাদের দেশের ওপর ব্যাপক নজর দেওয়া হবে বলে আশা করছিলেন। নিরাপত্তা পরিষদে যেকোনো প্রস্তাবে যৌথ বিবৃতির জন্য প্রয়োজন সর্বসম্মত মত। জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া পরিষদে বলেছেন, আমার বার্তা হলো অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। অস্ত্রবিরতি করতে হবে। অর্থপূর্ণ সংলাপ হতে হবে। দশকের পর দশক ধরে এই কথাটিই বলা হয়েছে। অনিষ্পন্ন এই ইস্যুগুলোর আংশিক ফল এই যুদ্ধ।
এই মিটিংয়ে যোগ দেয়নি ইসরায়েল বা ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের কেউ। তবে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব বন্ধের জন্য কূটনীতিকদের দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর। তিনি বলেন, দুঃখজনক হলো যখন ইসরায়েলিরা মারা যান, তখন কিছু মিডিয়া এবং রাজনীতিক কথা বলা শুরু করেন।
তিনি আরো বলেন, এটা সেই সময় নয় যখন ইসরায়েলকে তার ভয়াবহতা দ্বিগুণ করতে অনুমতি দেওয়া যায়। এটা সেই সময়, যখন ইসরায়েলকে তার পথ পরিবর্তনের জন্য বলা উচিত। তাদেরকে বলা উচিত শান্তির একটি পথ আছে। তাতে কোনো ফিলিস্তিনি বা ইসরায়েলি নিহত হবে না।
বিএসডি/এসএস