আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রহস্যময় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী জ্যোতিষী বাবা ভাঙ্গা’র নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন, যিনি এর আগে এমন অনেক বিষয় নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যেগুলো পরে অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেছে। এবার ২০২২ সালে ঘটতে পারে এমন কিছু বিষয় নিয়ে আগাম বার্তা পাওয়া গেল। কি সেই ভবিষ্যদ্বাণী- চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
এর আগে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে দায়েশ বা আইএসের উৎপত্তি, ব্রেক্সিট- এমনকি নাইন ইলেভেন নিয়েও ভবিষ্যদ্বাণী করেন।
যদিও তাঁর সব ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়নি। ২০১২ সালে এ বিষয়ে করা একটি তদন্ত জানায়, তাঁর অনেক ভবিষ্যদ্বাণী রাশিয়ান সোশ্যাল মিডিয়া ট্রল থেকে তৈরি করা হয়েছিল! তবে তাঁর ভয়ঙ্কর পূর্বানুমানগুলো আজো মানুষকে মুগ্ধ করে চলেছে। তিনি ১৯৯৬ সালে ৮৫ বছর বয়সে মারা গেলেও সামনের বছরগুলোর জন্য রয়ে গেছে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী।
২০২১ এর দিকে তাকিয়ে তিনি বলেছিলেন- এ বছর ক্যান্সারের নিরাময়ের দ্বারপ্রাপ্তে পৌঁছাবে মানুষ, সেই সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর একটি হত্যা প্রচেষ্টা হতে পারে। এ ছাড়াও তিনি ‘মানবতার দখলদার ড্রাগন’ সম্পর্কে পূর্বাভাস দিয়ে যান; অনুমান করা হচ্ছে- এটি দ্বারা তিনি পরাক্রমশালী চীনের ক্রমবর্ধমান উত্থানকে বোঝাতে চেয়েছেন।
আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সাল সম্পর্কেও ৬টি ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন তিনি। কি সেই ভবিষ্যদ্বাণী?
১. প্রাকৃতিক দুর্যোগ-বিপর্যয় বাড়বে
অস্ট্রেলিয়াসহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ বন্যার কবলে পড়বে- স্পষ্টতই ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন তিনি। আবহাওয়া দপ্তর বিষয়টি মেনে নিয়েছে। বলা হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় আর বন্যার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে- ২০২১-এর শুরুতে আঘাত হানা ‘ট্রপিক্যাল সাইক্লোন’ ইয়াসি এবং ব্রিসবেনের বন্যার মতো বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।
২, সাইবেরিয়ায় প্রাণঘাতী ভাইরাসের আবির্ভাব
প্রায় দুই বছর কভিড মহামারির সঙ্গে বেঁচে থাকার পরে এমনটি কেউই শুনতে চাইবে না। তবে বাবা বিশ্বাস করেন- এর চেয়েও প্রাণঘাতী কোনো ভাইরাস যা সাইবেরিয়াতে হিমায়িত অবস্থায় ছিল; জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মুক্তি পাবে।
ডিসেম্বরে বিজ্ঞানীরা প্রকাশ করে, তারা অ্যান্টার্কটিকার একটি বিশাল হিমবাহে উদ্বেগজনক ফাটল খুঁজে পেয়েছেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি ‘রহস্যময় অসুস্থতা’ তদন্তের জন্য দক্ষিণ সুদানে একটি টাস্কফোর্স মোতায়েন করেছে।
৩. পানীয় জলের সংকট
বাবা বিশ্বাস করেন- অনেক শহর পানীয় জলের অভাবে পড়বে। বিশেষজ্ঞরা তো এ ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই সতর্ক করে আসছেন।
৪. পৃথিবীতে এলিয়েন এনকাউন্টার
বিষয়টি আশ্চর্যজনক। একটু বেশি দূরের বলে মনে হতে পারে। কিন্তু বাবার মতে ‘ওমুয়ামুয়া’ নামে পরিচিত একটি গ্রহাণু পৃথিবীতে প্রাণ আছে কি-না তা খুঁজতে এলিয়েন পাঠাবে। তারা অবতরণ করার পর বন্দিদের নিয়ে যেতে পারে।
৫. ভারতে পঙ্গপাল
এ কথা ভারতীয়দের পছন্দ না-ও হতে পারে। তবে বাবা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন- তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাবে এবং পঙ্গপালের আক্রমণে ফসল ও খামারগুলো বিপর্যস্ত হবে।
৬. বাস্তবতা বোধ হারানো
বাবা ১৯৯৬ সালে ৮৫ বছর বয়সে মারা যান। যদিও তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছিলেন কিন্তু দৃশ্যত তিনি জানতেন যে ভার্চুয়াল বাস্তবতা আমাদের জীবনে বিপত্তি ঘটাবে। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে প্রযুক্তির প্রতি ক্রমবর্ধমান আসক্তির কারণে লোকেরা নিম্নমুখী হবে। তাদের কল্পনা ও বাস্তবতা বিভ্রান্ত হবে।
বোনাস : বাবা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে ২০২৩ সালে পৃথিবীর কক্ষপথ পরিবর্তিত হবে (আসলে এর অর্থ কী তা কেউ জানে না)। তাই আমরা যদি ২০২২-এর শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকি, তাহলে হয়তো দেখতে বা জানতে পারব।
সূত্র : নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড
এসএ